চিকিৎসক পরিচয়ে ১০০ নারীর সাথে প্রতারণা, ২ দিনের রিমান্ডে প্রতারক

|

চিকিৎসক পরিচয়ে ১০০ নারীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলা প্রতারক আতাউরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ফেইসবুক প্রোফাইলে তার পরিচয় তিনি একজন এমবিবিএস চিকিৎসক। একই সাথে একটি ফাইভ স্টার হোটেলের মালিকও। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই পরিচয় উল্লেখ করে প্রথমে নারীদের সাথে বন্ধুত্ব করতেন আতাউর রহমান(২৫)। এরপর প্রেমের ফাঁদে ফেলে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে হাতিয়ে নিতেন টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালংকার।

অবশেষে ভদ্রবেশী এই প্রতারক ধরা পড়েছে পুলিশের হাতে। মানিকগঞ্জের এক কলেজ ছাত্রীর সাথে প্রতারণার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়। প্রতারক আতাউর রহমানের বাড়ি কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার জামালপাড়া গ্রামে।

সোমবার (১৯ জুলাই) দুপুরে মানিকগঞ্জ সদর থানায় এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর সাহা জানান, গ্রেফতার আতাউর রহমান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেকে চিকিৎসক ও একটি ফাইভ স্টার হোটেলের মালিক পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নারীদের সাথে প্রতারণা করে আসছিলো। এরই ধারাবাহিকতায় মানিকগঞ্জ সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের অনার্স ২য় বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে প্রথমে ফেইসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েষ্ট পাঠান তিনি। ওই শিক্ষার্থী রিকুয়েস্ট একসেপ্ট করার পর থেকেই তার সাথে নিয়মিত ম্যাসেঞ্জারে চ্যাটিং শুরু করে এবং বন্ধুত্ব গড়ে তোলেন। বন্ধুত্বের সুবাদে আতাউর রহমান মানিকগঞ্জে বেশ কয়েকবার বেড়াতেও আসেন।প্রেমের ফাঁদে ফেলে তার কাছ থেকে হাতিয়ে নেন একটি স্বর্ণের ব্রেসলেট। ঈদের পর তাকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল প্রতারক আতাউর।

গত ১৮ জুলাই আতাউর মানিকগঞ্জে এসে ওই শিক্ষার্থীর সাথে ঘুরতে বের হন। শহরের নাগীনা কমপ্লেক্সের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে কৌশলে তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা করেন। এ সময় তার কু-মতলব বুঝতে পেরে মেয়েটি চিৎকার করলে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে তাকে ধরে ফেলে।

খবর পেয়ে পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।পরে ওই শিক্ষার্থী এই ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর সাহা আরও জানান, আতাউর রহমানের মোবাইল ফোন ঘেটে দেখা গেছে সে প্রায় ১০০ নারীর সাথে নিয়মিত চ্যাটিং করতেন তিনি। তাদের অনেকের সাথেই প্রেমের ফাঁদে ফেলে অথবা বিয়ের আশ্বাসে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। হাতিয়ে নেন টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালঙ্কার। রাজশাহীর একটি মেয়ে টেলিফোনে জানিয়েছেন তার সাথেও তিনি একই কায়দায় প্রতারণা করেছে আতাউর। তার কাছ থেকে একটি স্বর্ণের দুল নিয়েছে প্রতারক আতাউর।

পুলিশী জিজ্ঞাসাবাদে আতাউর রহমান জানিয়েছে, তিনি এমবিবিএস চিকিৎসক অথবা হোটেল মালিক কোনটিই নন। তিনি আসলে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসি বিভাগে লেখাপড়া করছেন। তার এই পরিচয়টিও আসল কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

সোমবার দুপুরে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আতাউর রহমানকে আদালতে পাঠানো হয়। মানিকগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply