রংপুর প্রতিনিধি:
অল্পের জন্য রক্ষা পেলো রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কেন্দ্রীয় অক্সিজেন ভাণ্ডারের প্রায় ৫০০ খালি অক্সিজেন সিলিন্ডার। একটি সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া চালান দেখিয়ে তিনটি ট্রাকে করে এসব অক্সিজেন সিলিন্ডার নিতে এসেছিল। টের পেয়ে ৬ জনকে গ্রেফতার এবং ট্রাক তিনটি জব্দ করেছে পুলিশ।
রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কেন্দ্রীয় অক্সিজেন ভাণ্ডারের ইনচার্জ আবু সাঈদ খাঁন বাবু জানান, গতকাল শুক্রবার (২৩ জুলাই) জুমার নামাজের পর তিনটি ট্রাক রমেকের কেন্দ্রীয় অক্সিজেন ভাণ্ডারের সামনে আসে। সেখান থেকে নেমে গাড়ির চালক ও হেলপাররা তিনটি চালান কপি দিয়ে আমাকে বলে, আমরা দিনাজপুর থেকে এসেছি। ডাক্তার রেজাউল ইসলাম আমাদের পাঠিয়েছেন। এরপর তারা আমাকে তিনটি চালান কপি দিয়ে বলেন, স্টোরে যত খালি অক্সিজেন সিলিন্ডার আছে সব ঢাকার করোনা ডেডিকেডেট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে।
বাবু আরও জানান, ট্রাক ড্রাইভারদের কথাবার্তা এবং চালানের বিষয়ে আমার সন্দেহ হলে বিষয়টি আমি হাসপাতালের পরিচালককে জানাই। এসময় তিনি আমাকে নিশ্চিত করেন এ ধরনের কোন চালান হয় নি এবং ঢাকায় অক্সিজেন সিলিন্ডার যাওয়ার কথা না।
বাবু বলেন, পরে পরিচালক বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ এসে ট্রাক তিনটি জব্দ করেন। এবং ৬ জন চালক ও হেলপারকে থানায় নিয়ে যান।
বাবু আরও জানান, এরা একটি সংঘবদ্ধ চক্র। কারণ তাদের কাছে অক্সিজেন ভাণ্ডারের গেটের চাবিও ছিল। তিনি বলেন ঘটনার সময় অক্সিজেন স্টোরে ১০০ টি ছোট এবং ৬২ টি বড় খালি অক্সিজেন সিলিন্ডার ছিল। একটি বড় অক্সিজেন সিলিন্ডার ৬ টি করে ছোট সিলিন্ডারের সমান। সে হিসেবে ৪৭২ টি খালি সিলিন্ডার প্রতারণা করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল তারা।
রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রশিদ জানান, রমেক পরিচালকের মাধ্যমে খবর পেয়ে আমরা ৩ টি ট্রাক জব্দ করে থানায় আনি। জব্দকৃত ট্রাকগুলো হলো- ঢাকা মেট্রো ট ১৫-৬৭৮১, ঢাকা মেট্রো ট ২২-৩১৩৬ ও ঢাকা মেট্রো ট ১৫-৭৬৮৩ নম্বর রেজিষ্ট্রেশনধারী। আর গ্রেফতারকৃতরা হলো, ট্রাক চালক মো. জহিরুল ইসলাম (৪৩), তার হেলপার আশিক রায়, ট্রাক চালক হাবিল (২৯) ও তার হেলপার মো. সাঈদ হাসান (২৯) এবং ট্রাক চালক মো. সুমন হোসেন (২৯) ও তার ড্রাইভার মো. সাইফুল ইসলাম (৩৪)।
ওসি জানান, তাদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে কথিত দিনাজপুরের ডা. রেজাউল ইসলামের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, এটি একটি বড় সিন্ডিকেট। আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এর সাথে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনতে চাই। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান ওসি।
এদিকে এ ঘটনায় হতবাক হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা। হাসপাতালের পরিচালক ডা. রেজাউল করিম জানান, দিনের বেলা এভাবে ভুয়া চালান তৈরি করে ভুয়া রেফারেন্স দিয়ে করোনাকালীন সময়ে অক্সিজেন সিলিন্ডার চুরির চেষ্টার ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। এর সাথে যারা জড়িত তাদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রেফতার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।
Leave a reply