কুমিল্লায় করোনার ঢেউ লেগেছে গ্রাম পর্যায়েও। স্বাস্থ্যবিধি মানতে উদাসীনতাও গ্রামেই বেশি। নগরীর বাইরে মৃত্যু ও সংক্রমণ বেড়েছে উদ্বেগজনক হারে। করোনায় আতঙ্কিত মানুষ টিকা নিতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে কোথাও কোথাও। হাসপাতালগুলোতে রোগীর এত চাপ আগে দেখেননি স্বাস্থ্যকর্মীরা। সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ সেবা স্থাপন ও শয্যা বাড়ানো হয়েছে প্রতিটি উপজেলা হাসপাতালেই। তারপরও রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম অবস্থা বিরাজ করছে।
কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, করোনা পরীক্ষার লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন পঞ্চাশোর্ধ মরিয়ম বেগম। হঠাৎই শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে, অবস্থার অবনতি ঘটে তার। উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তার স্বজন ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। কুমিল্লার সর্বদক্ষিণের প্রত্যন্ত এই অঞ্চলেও, উদ্বেগ ছড়িয়েছে ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। প্রতিদিনই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসছেন রোগী। ১০ থেকে ২০ শয্যায় রূপান্তর করা হয়েছে হাসপাতালটি। বসানো হচ্ছে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন। রোগীদের সেবায় সীমিত জনবলেই লড়ে যাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।
ওই হাসপাতালের এক স্বাস্থ্যকর্মী জানান, যাদের অবস্থা খারাপ হচ্ছে তাদের অক্সিজেন সাপোর্ট দিলে স্যাচুরেশন ৮০-৮৫ পর্যন্ত উঠে কিন্তু খুলে ফেললেই তা আবার নেমে যায়।
মনোহরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. হাসান ইবনে আমিন বলেন, আমাদের জনবল কম। তবে যে জনবল আছে তা নিয়েই আমরা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। অক্সিজেনের যে সংকট আছে সেটিও দ্রুত কেটে যাবে বলে মনে আশা করছি।
এদিকে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আতঙ্কিত গ্রামের সাধারণ মানুষেরা টিকার জন্য ভিড় করছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে। সম্প্রতি কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিকা নিতে আসা মানুষের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে দেখা যায়, করোনার ভয়াবহতা থেকে রক্ষায়, টিকা কেন্দ্রে হাজির গ্রামের শতশত মানুষ। উপচে পড়া ভিড় সামলাতে, হিমশিম অবস্থা স্বাস্থ্য কর্মীদের।
বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোঃ মীর হোসেন (মিঠু) বলেন, সাধারণত আমাদের প্রতিদিন ৪৫০ জনকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা থাকে। কিন্তু কোনো কোনোদিন আমাদের ১৪৩২ থেকে ৯৫০ জনকেও টিকা দিতে হয়েছে। এসব কারণে আমরা মানুষের ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, রোগ নির্ণয়ের সাথে সাথে চিকিৎসকের কাছে গেলে অনেকটাই কমে আসবে মৃত্যুর হার।
/এস এন
Leave a reply