নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি:
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুড কারখানায় আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া ৪৮ জনের মধ্যে ৪৫ জনের পরিচয় শনাক্ত করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক শাখা। বাকি অজ্ঞাত তিন মৃতের পরিচয় নির্ধারণের কাজ চলতি সপ্তাহেই শেষ হবে।
ডিএনএ পরীক্ষার চূড়ান্ত রেজাল্ট হাতে আসলেই সিআইডি পুলিশ মরদেহগুলো নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করে। জেলা প্রশাসন সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিপূরণের টাকাসহ লাশগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করবেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন জানান, আগুনে পোড়া ৪৮টি লাশের পরিচয় শনাক্ত করতে নিহতদের পরিবারের ৬৬ জন স্বজনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। মৃতদের মধ্যে ৪৫ জনের লাশ শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছি। বাকি তিনজনের লাশ শনাক্তের কাজ চলছে। চলতি সপ্তাহের মধ্যে বাকি তিনজনের লাশ শনাক্তের প্রক্রিয়া শেষ করেই জেলা প্রশাসনের কাছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে লাশ হস্তান্তর করা হবে।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ জানান, সিআইডির ফরেনসিক বিভাগ লাশের পরিচয় শনাক্ত করেছে কিনা বিষয়টি আমাকে এখনও জানানো হয়নি। তবে সিআইডি যদি ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে সবার পরিচয় শনাক্ত করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করে, তাহলে আমরা একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে সেগুলো বুঝে নিয়ে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করবো। লাশ দাফনের জন্য নিহত ব্যক্তির পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে দেয়া হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
হাসেম ফুডসের কারখানায় আগুনে পুড়ে ৫২ জনের মৃত্যুর ঘটনায় রূপগঞ্জ থানার ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক নাজিম উদ্দিন বাদী হয়ে কারখানার মালিক আবুল হাসেম ও তার চার ছেলেসহ মোট আটজনের বিরুদ্ধে রূপগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় গত ১০ জুলাই অভিযুক্ত আবুল হাসেম ও তার চার ছেলেসহ মোট আটজনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে মামলাটি তদন্তের জন্য অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এদিকে স্বজনরা লাশ বুঝে না পেলেও হাসেম ফুডস অ্যান্ড বেভারেজের মালিক আবুল হাসেমসহ তার চার ছেলের সবাই জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। তবে অপর চার আসামি যথাক্রমে হাসেম ফুডসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহান শাহ আজাদ, উপ মহাব্যবস্থাপক মামুনুর রশিদ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ৮ জুলাই রূপগঞ্জের হাসেম ফুড কারখানায় আগুনে পুড়ে ৫১ জনের মৃত্যু হয়। নিহত তিন ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত হওয়ায় তখনই স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়। বাকি লাশগুলো আগুনে এতটাই পুড়ে যায় যে দেখে চেনা বা শনাক্ত করার উপায় ছিল না। পরিচয় শনাক্ত না হওয়া লাশগুলো ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে।
ইউএইচ/
Leave a reply