ফুটবল মাঠে মুখোমুখি ব্যক্তিগত দ্বৈরথে সবার আগেই থাকবেন সদ্য সাবেক বার্সেলোনা অধিনায়ক লিওনেল মেসি এবং চির প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদ অধিনায়ক সার্জিও রামোস। কিন্তু বিশ্বসেরা ফরোয়ার্ড এবং বিশ্বসেরা ডিফেন্ডার ঘটনাচক্রে এখন একই ক্লাবের খেলোয়াড়। আগুন এবং বরফ যেন রাখা হলো একই পাত্রে।
এল ক্ল্যাসিকোর গত এক যুগের ইতিহাস ন্যু ক্যাম্প ও সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে আগুন ঝরা ফুটবল দ্বৈরথের ইতিহাস। যার মধ্যে অনেকবারই লিও মেসিকে আটকাতে বৈধ অবৈধ নানাভাবেই চেষ্টা করে গেছেন রিয়াল মাদ্রিদ ডিফেন্সের অতন্দ্র প্রহরী সার্জিও রামোস। ডাগআউটে এসেছে পরিবর্তন; গার্দিওলা বনাম মরিনহোর সময় থেকে এনরিকে বনাম জিদান, ভিলানোভা বনাম আনচেলোত্তি বা ভালভার্দে বনাম জিদান, এসেছে অনেক নাম। কিন্তু অপরিবর্তিত ছিল একটি দ্বৈরথ, মেসি বনাম রামোস। মাঠ হয়েছে রক্তাক্ত।
কেবল মেসিকে ফাউল করেই তিনবার লাল কার্ড দেখছেন রামোস, হলুদ কার্ডও আছে বেশ অনেকগুলোই। লা লিগার ইতিহাসে সর্বোচ্চ লাল কার্ডের অস্বস্তিকর রেকর্ডটি রামোসের। ২৫ লাল কার্ডের ৬টিই দেখেছেন তিনি এল ক্লাসিকোর উত্তাপে। তার মধ্যে মেসির মুখে কনুইয়ের আঘাত দিয়ে করেছেন রক্তাক্ত। লাল কার্ড দেখে মাঠ ছেড়ে রামোস দেখেছেন, ৯১ মিনিটে বার্নাব্যুকে স্তব্ধ করে দিয়ে জার্সি উঁচিয়ে শ্রেষ্ঠত্ব প্রদর্শন করছেন আহত রক্তাক্ত লিও মেসি।
এছাড়াও কোপা দেল রের ফাইনালে মাদ্রিদকে ৪-৩ গোলে হারিয়েছিল বার্সেলোনা যে ম্যাচে, সেদিনও ৩-২ গোলে এগিয়ে ছিল রিয়াল মাদ্রিদ। এগিয়ে এলেন রামোস। মেসি ও বুসকেটসকে জোড়া ফাউল করে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন রামোস। আর ১০ জনের মাদ্রিদকে হজম করতে হয় মেসির আরও দুটি গোল।
অন্যদিকে এল ক্লাসিকোর আগেই কথার লড়াই শুরু করার জন্য প্রসিদ্ধ ছিলেন মাদ্রিদ ডিফেন্সের নেতা সার্জিও রামোস। খেলার মধ্যে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সর্বস্ব দিয়ে লড়ে রিয়াল মাদ্রিদকে এল ক্লাসিকো জিততেও সাহায্য করেছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা এই ডিফেন্ডার। এভাবেই মেসি ও রামোসের প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রতিটি এল ক্লাসিকোর শেষেই উঠে যেতো নতুন উচ্চতায়।
তবে মাঠের বাইরে পরষ্পরের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান বেশ কয়েকবারই প্রকাশ করেছেন এই দুই সর্বোচ্চ পর্যায়ের খেলোয়াড়। কিন্তু কিছুদিন আগেও হয়তো কেই ঘুণাক্ষরেও ভাবতে পারেনি, মাঠের এই দুই বিপক্ষ যোদ্ধা একদিন একই সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে খেলার অবস্থায় যাবেন। মাদ্রিদ ও বার্সার প্রতীক হয়ে যাওয়া দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বী যে একই ক্লাবের হয়ে খেলবেন, তার অস্তিত্ব হয়তো ছিল কেবল সমর্থকদের সুদূরতম কল্পনায়। মেসি ম্যাজিক থামাতে মাদ্রিদকে যে রামোসের দিকে তাকিয়ে থাকতো হতো, সেই রামোস বা মেসি কেউই নেই এখন লা লিগায়। তারা এখন পিএসজি সতীর্থ এবং এটাই বাস্তবতা।
/এমই
Leave a reply