স্টাফ রিপোর্টার, মানিকগঞ্জ:
বিয়েতে রাজি না হওয়ায় গৃহশিক্ষিকার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়ার অভিযোগ ওঠেছে এক ছাত্রীর বাবার বিরুদ্ধে। অগ্নিদগ্ধ গৃহ শিক্ষিকা কাজল আক্তারকে (২৫) রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। তার শরীরের ৩৮ শতাংশ পুড়ে গেছে বলে জানা গেছে।
গত সোমবার (২৩ আগস্ট) রাতে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের দ্বিমুখী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।পরদিন মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) রাতে এ ঘটনায় ছাত্রীর বাবা অভিযুক্ত শরিফ মিয়ার (৪০) নামে থানায় মামলা হয়েছে। শরিফ মিয়া দুই সন্তানের জনক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ভুক্তভোগী গৃহশিক্ষিকা কাজল আক্তার মানিকগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্রী। পড়ালেখার পাশাপাশি তিনি এলাকায় টিউশনিও করেন। অভিযুক্ত শরিফের মেয়েকে দীর্ঘদিন ধরে তিনি প্রাইভেট পড়াতেন। এর সূত্র ধরে শরিফের সাথে কাজলের এক ধরণের ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
কিন্তু, বছর খানেক আগে সাউথ আফ্রিকা প্রবাসী ছেলের সাথে মোবাইল ফোনে পারিবারিকভাবে কাজলের বিয়ে হয়। স্বামী প্রবাসে থাকায় কাজল বাবার বাড়িতেই থাকতেন।
কাজলের মায়ের অভিযোগ, তার মেয়েকে শরিফ বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু, কাজল এতে রাজি না হওয়ায় তার প্রতি ক্ষিপ্ত হন শরিফ। কাজলের মা জানান, সোমবার রাতে শরিফ কৌশলে তার মেয়েকে বাড়ির পাশের কাঠ বাগানে ডেকে নিয়ে যান। এ সময়, কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শরিফ কাজল আক্তারের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। কাজল চিৎকার দিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে শরিফ পালিয়ে যান।
এরপর স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় মুন্নু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাতেই রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।
ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব জানান, ঘটনার পর স্বজনরা রোগীর চিকিৎসায় ব্যস্ত ছিলেন। এজন্য তাদেরকে প্রথমে জানানো হয়নি। খবর পেয়ে পুলিশই ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। পরে মেয়েটির মা বাদী হয়ে শরিফ মিয়াকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। আসামি পলাতক আছে, তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
/এস এন
Leave a reply