করোনা টিকার অপচয় রোধে থাই গবেষকদের বিশেষ উদ্ভাবন

|

ভ্যাকসিনের অপচয় রোধে বিশেষ উদ্ভাবন অটোভ্যাক।

বিশ্বজুড়েই এখন করোনা টিকার চাহিদা তুঙ্গে। তবে সে তুলনায় জোগান নেই টিকার। বিশেষ করে, স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে একপ্রকার হাহাকার চলছে ভ্যাকসিনের জন্য। বিপুল এই চাহিদার মধ্যে, টিকা সাশ্রয়ের এক অনন্য উপায় বের করেছেন থাইল্যান্ডের গবেষকরা।

করোনা টিকার অপচয় রোধে বিশেষ এক যন্ত্র বানিয়েছেন থাইল্যান্ডের গবেষকরা। অটোভ্যাক নামের এই মেশিন ব্যবহারে অপচয় হবে না টিকার এক ফোঁটাও। এর ফলে অতিরিক্ত ২০ শতাংশ টিকা পাওয়া যাবে প্রতিটি ভায়াল থেকে। টিকা সাশ্রয়ের পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপরও চাপ কমাবে এই মেশিন। এরই মধ্যে থাইল্যান্ডের কিছু টিকাদান কেন্দ্রে শুরু হয়েছে এটির ব্যবহার।

ম্যানুয়ালি, অর্থাৎ হাতে বের করলে, অ্যাস্ট্রাজেনেকার একটি ভায়াল থেকে ১০ ডোজ টিকা নেয়া যায়। কিন্তু অটোভ্যাক নামের এই রোবটিক আর্ম, প্রতি ভায়াল থেকে টিকা সংগ্রহ করতে পারে ১২ ডোজ। এতে একবিন্দু টিকাও অপচয় হয় না। ভ্যাকসিনের সংকটের মধ্যে, প্রতি ভায়ালে ২০ শতাংশ বেশি টিকা প্রাপ্তিকে বিশাল পাওয়া মনে করছেন উদ্ভাবকরা।

প্রধান গবেষক জুথামাস রতনাভারাপুরান, প্রতিটি ভায়াল থেকে অতিরিক্ত ২০ শতাংশ টিকা পাওয়ার গ্যারান্টি দেয় মেশিন। ১০ ডোজের বদলে পাওয়া যাবে ১২ ডোজ। টিকা সঙ্কটের সময় এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একটি ভায়ালের ক্ষেত্রে হয়তো পরিমাণটুকুকে কম মনে হবে। কিন্তু, বৃহৎ পরিসরে তাকালে দেখবেন, অটোভ্যাক ব্যবহারে ১০ লাখ মানুষের জন্য টিকা কিনে প্রয়োগ করা যাবে ১২ লাখ মানুষকে।

ভায়াল থেকে নিখুঁত পরিমাপে টিকা সংগ্রহ করে বলে অটোভ্যাক ব্যবহারে ভ্যাকসিন অপচয়ের কোনো সুযোগ নেই। প্রতি চার মিনিটে, অ্যাস্ট্রাজেনেকার একটি ভায়াল থেকে ১২ ডোজ টিকা প্রস্তুত করতে সক্ষম মেশিনটি। উদ্ভাবকরা বলছেন, কেবল টিকার অপচয় নয়, স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর চাপও কমাবে অটোভ্যাক। কমবে টিকাদানে ভুলভ্রান্তির সংখ্যা।

অটোভ্যাক প্রোজেক্টের প্রধান গবেষক জুথামাস রতনাভারাপুরান, বড় বড় টিকা কেন্দ্রগুলোয় প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষকে টিকা দিতে হয়। এতে স্বাস্থ্যকর্মীদের হিউম্যান এররেরও আশঙ্কা আছে। তাছাড়া এক ফোঁটা টিকাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই মেশিন ব্যবহারে নার্সদের ওপর চাপ কমবে। প্রয়োগের জন্য স্বয়ংক্রিয়ভাবেই সিরিঞ্জ প্রস্তুত থাকবে।

সিরিঞ্জের মতো যন্ত্রাংশসহ অটোভ্যাক মেশিনটির দাম পড়বে ৭৬ হাজার ডলারের মতো। এখন কেবল অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভায়ালে এই মেশিনটি ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে, ফাইজার ও মডার্নার ভ্যাকসিনের জন্যেও অটোভ্যাক তৈরির পরিকল্পনা আছে উৎপাদকদের।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply