তুচ্ছ কারণে শ্রমিক মারধর, সহকারী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে মামলার প্রস্ততি

|

অভিযুক্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল ইসলাম।

তুচ্ছ কারণে ফিল্মি স্টাইলে গভীর রাতে ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে এক নির্মাণ শ্রমিককে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী শ্রমিক শেখর হাওলাদার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ কাজের ম্যানেজার হিসাবে কর্মরত। এ ঘটনায় ঠিকাদারের পক্ষে মামলা গ্রহণের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।

গত বৃহষ্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

অভিযোগে জানা গেছে যে, পাথরঘাটা এলজিইডির তত্ত্বাবধানে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের নির্মাণ কাছ চলছে। ওই ভবনটির নির্মাণ কাজের দেখভালের দায়িত্বে আছেন পাথরঘাটা এলজিইডি’র একটি প্রজেক্টের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল ইসলাম। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি দুই তিন দিন পরপর সেখানে গিয়ে ঠিকাদারের ম্যানেজারের থেকে টাকা ও সিগারেট নেন।

ঘটনার দিন গত বৃহষ্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রকৌশলী রাকিবুল ইসলাম ওই নির্মাণাধীন প্রোজেক্টে যান। সেখানে ঠিকাদারের ম্যানেজার শেখর হাওলাদারকে তার জন্য এক প্যাকেট সিগারেট নিয়ে আসতে বলেন। প্রথমে অপারগতা প্রকাশ করলেও পরে ওই প্রকৌশলীর কথা রাখতে থেকে এক প্যাকেট সিগারেট কিনে নিয়ে আসেন শেখর। এ সময় এক নির্মাণ শ্রমিকের অনুরোধে ম্যানেজার শেখর প্রকৌশলী রাকিবুল ইসলামের কাছে একটি সিগারেট চাইলে রাকিবুল গালিগালাজ করে চলে যান।

পরে ম্যানেজার তার ভুল বুঝতে পেরে ফোন করে তার কাছে ক্ষমা চান। কিন্তু রাকিবুল ইসলাম সেখানকার ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের দিয়ে শেখরকে ফোন করিয়ে হুমকি দিয়ে গালিগালাজ করেন।

পরে রাত ১১টার দিকে প্রকৌশলী রাকিবুল ইসলামসহ আরো ৯ জন সন্ত্রাসী তিনটি মটরসাইকেল যোগে স্কুলে এসে শেখরকে কিল, ঘুষিসহ লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটান। এতে শেখর মাথায় গুরুতর আঘাত পায়। পরে তাকে স্থানীয় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়।

এ ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী প্রোজেক্টের সামনের চা-পানের দোকানি মাকসুদা বেগম জানান, বৃহস্পতিবার রাতে তিনটি মটরসাইকেলে প্রকৌশলী রাকিব দলবল নিয়ে আসেন। ম্যানেজার শেখরকে স্কুলে দোতালায় রুমে আটকিয়ে তারা মারধর করেন। চলে যাওয়ার সময় তিনি তাদের বলতে শোনেন, ‘সব কিছু ডিলেট করা হয়েছে’। এরপর এরকম কিছু করলে তোকে জানে মেরে ফেলবো। 

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী শেখর হাওলাদার বলেন, আমি এখানে চাকরি করি। প্রকৌশলী স্যার প্রায়ই আমার কাছ থেকে টাকা ও সিগারেট নিয়ে যায়। ওইদিন কাছাকাছি কোনো দোকান খোলা ছিলোনা তাই আমার এক শ্রমিক বলেন আমি স্যারের কাছ থেকে যেন একটি সিগারেট চেয়ে রাখি। আমি সহজ সরল মনে তার কাছে সিগারেট চাই। সে না দিয়ে উল্টো আমাকে গালিগালাজ করে। পরে আমি তার কাছে মাফ চেয়েছি। কিন্তু রাতে স্যার নিজে ৯ জন লোক নিয়ে আমাকে প্রচুর মেরেছে। 

এ ব্যপারে অভিযুক্ত উপসহকারী প্রকৌশলী রাকিবুল ইসলাম বলেন, আমি তাকে মারিনি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দেয়া হয়েছে। তাকে মেরেছে ছাত্রলীগের ছেলেরা।  আমি এসব বিষয়ে কিছুই জানিনা।

পাথরঘাটা  উপজেলা প্রকৌশলী চন্দন কুমার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সামান্য ভুল বোঝাবুঝির কারণে এ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। আমরা ইতিমধ্যে ওই প্রকৌশলীকে শোকজ করেছি এবং ওই সাইট থেকে সরিয়ে নিয়েছি। আশা করি ৭ দিনের মধ্যে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থাও নেয়া হবে।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply