বিগত ১০ বছরে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪ জন শিক্ষক চাকরি হারিয়েছেন যৌন নিপীড়নের অভিযোগে। সবশেষ বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে তারই এক সহকর্মী যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন। একের পর এক এমন ঘটনাকে নৈতিক স্খলন হিসেবে দেখছেন শিক্ষকরা। শিক্ষক নিয়োগে অস্বচ্ছতা ও লেজুরবৃত্তির রাজনীতিকে দুষছেন তারা।
রাজনীতি ও সেশনজটমুক্ত ক্যাম্পাস সবসময়ই আকর্ষণ করেছে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের। তবে, ছায়া-সুনিবিড় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ক্যাম্পাসে নানা সময়ে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে যৌন নিপীড়নের ঘটনা।
এ পর্যন্ত ছাত্রীদের উত্যক্ত, আপত্তিকর প্রস্তাব আর সরাসরি যৌন হয়রানির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চার শিক্ষক চাকরি খুইয়েছেন। প্রথম ২০১২ সালে অর্থনীতি ডিসিপ্লিনের শিক্ষক সাইফুল ইসলাম, এরপর ২০১৩ সালে বাংলা বিভাগের আনিসুর রহমান, ২০১৬ সালে অ্যাগ্রো ডিসিপ্লিনের আমিনুল ইসলাম ও ২০১৭ সালে গণিত বিভাগের মো. শরীফ উদ্দিনকে চাকুরিচ্যুত করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর আশিষ কুমার দাস জানান, সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের শিক্ষকের কাছে এধরণের অপরাধ কোনোভাবেই কাম্য নয়। তিনি বলেন, আমি একে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার ব্যর্থতাই বলবো। শিক্ষক নিয়োগের সময় ব্যক্তি ভাল কিনা তা যাচাই-বাছাই করার পদ্ধতি থাকলে বর্তমানের চেয়ে পরিস্থিতি একটু হলেও ভালো থাকতো।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন সেলের দায়িত্বে আছেন অধ্যাপক তাসলিমা খাতুন। সহকর্মীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ বিব্রত করেছে তাকেও। তিনি জানান, দোষীকে ছাড় দেয়া হবেনা। আমরা যথাযথ প্রক্রিয়ায় ঘটনাটির তদন্ত করবো। তদন্তে যা বেরিয়ে আসবে তা প্রেরণ করা হবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে।
যৌন নিপীড়নের অভিযোগ গুরুত্বের সাথে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানালেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। তিনি বলেন, এ ধরণের অপরাধের দুই রকম সাজা আছে। একটি হচ্ছে লঘুদন্ড আরেকটি গুরুদন্ড। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে সে কতটুকু দোষী কিংবা আদৌ দোষী কিনা।
Leave a reply