দেড় বছর ধরে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎ, ১৬ শিক্ষক-কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা

|

চন্ডিপুর এফ. হক স্কুল এন্ড কলেজ

গাইবান্ধা প্রতিনিধি :

মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির টাকা আত্নসাতের অভিযোগে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার চন্ডিপুর এফ. হক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও সভাপতিসহ ১৬ জন শিক্ষক-কর্মচারীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের পক্ষে স্থানীয় রিপন মিয়া নামের এক ব্যক্তি বাদি হয়ে সিনিয়র সহকারী জজ (সুন্দরগঞ্জ) গাইবান্ধার আদালতে এই মামলাটি দায়ের করেছেন। মামলা নং ২২৭/২১, তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর।

মামলার মূল আসামি করা হয়েছে, চন্ডিপুর এফ. হক উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মো. মোজাম্মেল হক, পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি আমিন হোসেন, অফিস সহকারী ফিরোজ কবির ও সহকারী শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুর রশিদ, মোজাহিদুল সরকার, সাইফুল্লা এবং হাবিবুর রহমান।

সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদি পক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট মো. নুরুল ইসলাম প্রধান।

এর আগে, শিক্ষক-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের ঘটনায় গত ১২ আগষ্ট প্রতিবেদন প্রচার করে যমুনা টেলিভিশন। এছাড়া এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমেও ফলাও করে সংবাদ প্রচার হয়।

মামলার বরাত দিয়ে তিনি জানান, ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষে বিদ্যালয়ের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির তালিকায় নাম ও তথ্য ঠিক থাকলেও কৌশলে মোবাইল নাম্বার পরিবর্তন করেন সাবেক অধ্যক্ষ ও সাবেক সভাপতিসহ কতিপয় শিক্ষক-কর্মচারী। পরে গত দেড় বছর ধরে এসব শিক্ষার্থীর কয়েক কিস্তিতে মোবাইল অ্যাকাউন্টে আসা উপবৃত্তির মোট ৪ লাখ ৩২ হাজার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেন তারা।

ঘটনার প্রতিকার চেয়ে লিখিত অভিযোগের পর সরেজমিন তদন্তে উপবৃত্তি আত্মসাতসহ অধ্যক্ষ ও শিক্ষক-কর্মচারীদের জড়িত থাকার প্রামাণও পায় উপজেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটি। কিন্তু দীর্ঘদিনেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও শিক্ষা অধিদপ্তর জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি। এমনকি উপবৃত্তির টাকা ফেরতও পায়নি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।

তিনি আরও জানান, মোবাইল নাম্বার পরিবর্তনের মাধ্যমে উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতে জড়িতদের বিচার ও ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের টাকা ফেরতের দাবিতে আদালতে প্রতিনিধিত্ব মূলক মামলা করেন রিপন মিয়া। আগামি ৭ অক্টোবর মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন আদালত। এরআগে গত ৩০ জুন বিবাদি সাবেক অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে উকিল নোটিশ প্রেরণ করা হলেও তিনি কোনো জবাব দেননি।

এছাড়া মামলায় সহযোগী আসামি করা হয়েছে, বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুর রহিম, সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, সোনালী ব্যাংক শাখার সুন্দরগঞ্জ ব্যবস্থাপক, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের রংপুর অঞ্চলের কর্মকর্তা, চেয়ারম্যান মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বোর্ড দিনাজপুর ও পরিচালক মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply