তালেবান ইস্যুতে যে কারণে এখনও নিরব সৌদি আরব

|

সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।

মুসলিম বিশ্বে সৌদি আরবের প্রভাব প্রতিপত্তি ক্রমশ নিম্নগামী, আফগানিস্তানে তালেবানের ক্ষমতায় আরোহনের পর সৃষ্ট পরিস্থিতিতে এ বাস্তবতা যেন আরও বেশি প্রকট হয়ে উঠেছে। অথচ এর আগে দুই দশক ধরে আফগানিস্তান থেকে সোভিয়েত সৈন্য তাড়ানোর কার্যক্রমে সৌদি আরব ছিলো সবার আগে।

সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুই প্যারার দায়সারা এক বিবৃতির বাইরে সৌদি সরকার আফগান পরিস্থিতি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি, এক সময় সৌদি আরব তালেবানের অন্যতম প্রধান সমর্থক এবং নিয়ন্ত্রক হলেও সেই সম্পর্ক এখন যেন অনেকটাই তলানিতে এসে পৌঁছেছে। খবর বিবিসি’র।

আফগান-সৌদি সম্পর্কে ভাঙনের সূচনা ১৯৯৮ সালে। আল-কায়দা নেতা ওসামা বিন লাদেন আফগানিস্তানে আশ্রয় নিলে সৌদি আরব প্রশাসন তাকে আটক করে তাদের হাতে তুলে দিতে বললে তা অগ্রাহ্য করে তৎকালীন তালেবান সরকার। এরপর ২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের টুইন টাওয়ারে সন্ত্রাসী হামলার পর তালেবান-সৌদি সম্পর্ক হিমঘরে চলে যায়।

এর আগে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সময় আফগান মুজাহিদীনদের প্রয়োজনীয় অর্থের অন্যতম প্রধান যোগানদাতা ছিল সৌদিরা। আফগান গৃহযুদ্ধে জয়ী হয়ে তালেবান ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করলে, যে তিনটি দেশ তাদের স্বীকৃতি দিয়েছিল তাদেরও অন্যতম ছিল সৌদি আরব। সে সময় প্রথম দুবছর তালেবান সরকারের অর্থকড়ির প্রধান যোগানদাতা ছিলো রিয়াদ প্রশাসন। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলে গেছে। আবারও তালেবান ক্ষমতায় এলেও এবার কাবুলের সৌদি দূতাবাসের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।

লন্ডনভিত্তিক মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক ঝুঁকি সম্পর্কিত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান দ্যা ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারেস্টের প্রধান সামি হামদী বলেন, আফগান দৃশ্যপট থেকে সৌদি আরব হঠাৎই উধাও হয়ে গেছে। সারা বিশ্বের এবং এমনকি বিশ্বব্যাপী মুসলিমদের মাঝেও সৌদি আরবের প্রভাব যে আসলেই কমেছে এটি তারই প্রমাণ।

কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত বা তুরস্কের মত দেশগুলো আফগান সঙ্কটে বিভিন্নভাবে এগিয়ে এলেও দৃশ্যত কোথাওই যেন নেই সৌদি আরব। এমন অবস্থায় বিশ্বব্যাপী মুসলিমদের মনে প্রশ্ন ওঠা খুবই স্বাভাবিক যে, কেন নিশ্চুপ তালেবানের একসময়কার মিত্র সৌদি আরব! সম্প্রতি জেদ্দা থেকে প্রকাশিত একটি সংবাদপত্রের উপ-সম্পাদকীয়তে আফগানিস্তানে কাতারের ভূমিকায় আমেরিকার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ ছাড়া অন্য কোনো ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত আছে রিয়াদ।

যুক্তরাষ্ট্রে বাইডেন প্রশাসন কাতারের ভূমিকায় এতটাই খুশি যে, গত ৬ই সেপ্টেম্বর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন দোহায় গিয়ে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির সাথে ডিনার করে এসেছেন।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply