ইয়াবা পাচাররোধে আলোচনায় আগ্রহী নয় মিয়ানমার

|

প্রতিদিনই রুট ও কৌশল পাল্টাচ্ছে ইয়াবা কারবারীরা। মিয়ানমার থেকে নৌপথের পরিবর্তে এখন স্থলপথে বেড়েছে ভয়ঙ্কর এই মাদকের পাচার। গত এক বছরে টেকনাফ, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি, সিলেট ও সাতক্ষীরা স্থলপথে ইয়াবার পাচার বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। আর অন্যদিকে নানামুখী চাপেও ইয়াবা পাচাররোধে কোনো আলোচনায় মিয়ানমান আগ্রহী হয়নি বলে জানান বিজিবি কর্মকর্তারা।

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তে প্রায় ত্রিশ বছর ধরে বাস করা এক ব্যক্তি নিজের পরিচয় না দিয়ে দিয়ে জানালেন, কীভাবে সীমান্তরক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে ঢুকছে ইয়াবা। জানালেন, একটা সময় নাফ নদী দিয়ে টেকনাফে খালাস হতো ইয়াবার চালান। ট্রলারে করে সাগরপথে কক্সবাজারের কোনো কোনো স্থানে নামতো এসব মাদক। কিন্তু সময়ভেদে পাল্টেছে পাচারের রুট। এখন স্থলপথকেই বেশি নিরাপদ ভাবছে পাচারকারীরা।

পরিসংখ্যান বলছে, এক বছরের শুধু বিজিবির কক্সবাজার ব্যাটালিয়ন আটক করেছে সাতান্ন লাখের বেশি ইয়াবা। এই সময়ে বিজিবির সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে অন্তত পাঁচজন। মিয়ানমার অংশের ডেকুবুনিয়া, মিরুল্লা, নাগপুরসহ অন্তত দশটি এলাকা থেকে বাংলাদেশের হোয়াইকং, পালংখালি, ঘুমধুমসহ আটটি পয়েন্ট দিয়ে ঢুকছে ইয়াবা। কক্সবাজারে ৩৪ অধিনায়ক লে. কর্নেল আলী হায়দার আজাদ আহমেদ জানালেন, সীমান্তে বেঁড়া থাকলেও তা কেটে ঢুকে পড়ে কারবারীরা। এছাড়া নিজেদেরও কিছু সীমাবদ্ধতা স্বীকার করলেন তিনি। জানালেন, একইসাথে সবগুলো পয়েন্টে লোকবল নিয়োগ করতে পারছেন না তারা।

পাচারকারীদের আরেকটি পছন্দের রুট ভারতের মিজোরাম ও মেঘালয় দিয়ে তিন পার্বত্য জেলা, সিলেট ও সাতক্ষীরা। এছাড়া, নৌপথে অনেকে ভোলা, বরিশালের বিভিন্ন পয়েন্ট চালান খালাস করা নিরাপদ মনে করে। র‍্যাব-১৫ অধিনায়ক উইং কমান্ডার আজিম আহমেদ জানালেন, আটককৃত কয়েকটি চালানের সাথে সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তারা এসব চালান নিয়ে কক্সবাজারেই যেতো না। গভীর সমুদ্র দিয়ে তারা সোজা পটুয়াখালী চলে যেত।

ভয়াবহ এই মাদকে তাহলে রোধ করা যায় কীভাবে? অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমাধানের পথ খুজতে হবে দীর্ঘমেয়াদে ও কার্যকরভাবে। অপরাধ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম. এমদাদুল হক জানালেন, অভিযানগুলোকে অব্যহত রাখতে হবে। এছাড়া এসব অভিযান আরও সতর্কভাবে ডিজাইন করারও পরামর্শ তার।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply