২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ৩০ জনসহ ১০২ জন স্বাভাবিক জীবনে ফেরার শপথ নিয়ে আত্মসমর্পন করেন। এ নিয়ে শুরু থেকেই বিতর্ক ছিল। কারণ, তালিকার শীর্ষে থাকা ব্যক্তিরা ছিলেন না আর অনুষ্ঠানেও উপস্থিত ছিলেন চিহ্নিত ইয়াবা কারবারিরা।
আত্মসমর্পনের ৯ শর্তের মধ্যে একটি ছিল জেল থেকে ছাড়া পাবার পর আর ফেরা যাবে না এই পেশায়। কিন্তু জামিনে বের হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই আবারও ইয়াবা নিয়ে গ্রেফতার হন ইউপি সদস্যসহ চারজন। কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান জানান, কেউ ধরা পড়লেই মাদক ব্যবসায়ীদের পুরানো তালিকায় তার নাম আছে কিনা তা মিলিয়ে দেখা হয়।
যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইয়াবা কারবারিদের নতুন কোনো তালিকা তৈরি করেনি সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো।
নতুন-পুরাতনের মিশেলে ২০-২৫ জনের একটি সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছে টেকনাফের ইয়াবার কারবার। যে তালিকায় পৌর ও ইউনিয়ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি আছেন অর্ধেকের বেশি। যাদের মধ্যে টেকনাফ সদর, সাবরং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ সাতজন এবারও নেমেছেন জনপ্রতিনিধি হওয়ার লড়াইয়ে। তারা জনপ্রতিনিধি হলে সমাজে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন সচেতন মহল।
কক্সবাজার জেলা সুজনের সম্পাদক মাহবুবুর রহমান বলেন, এ ধরনের লোক জনপ্রতিনিধি হলে তো মাদক ব্যবসা চাঙ্গা করার চেষ্টা করবে। তবে পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান বললেন, তাদের সবসময়ই নজরদারিত রাখা হয়।
শতাধিক ইয়াবা কারবারি আত্মসমর্পনের কিছুদিন পরই একজনের কাছ থেকেই প্রায় ১৪ লাখ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। পরিসংখ্যান বলছে, গতবছর এবং চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত কক্সবাজারেই ইয়াবা উদ্ধার হয়েছে পনের কোটির বেশি। মামলা হয়েছে প্রায় আড়াই হাজার।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক (গোয়েন্দা) মোসাদ্দেক হোসেন রেজা জানান, সীমিত সামর্থ্যের মধ্যেও তারা তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
মোদ্দাকথা, কাজে আসেনি টেকনাফের শতাধিক ইয়াবা কারবারির আত্মসমর্পণ। অনেকেই ছাড়া পেয়ে ফিরেছে পুরানো পেশায়। গেলো দুই বছরে মরণনেশা ইয়াবার কারবারও বেড়েছে দুই থেকে তিনগুণ। গত এক বছরে শুধু কক্সবাজারেই উদ্ধার হয়েছে পনের কোটির বেশি ইয়াবা।
Leave a reply