ইভ্যালির দায় এড়াতে পারে না বাণিজ্য মন্ত্রণালয়: অর্থমন্ত্রী; লোভ সংবরণের পরামর্শ বাণিজ্যমন্ত্রীর

|

ছবি: সংগৃহীত

ই-কমার্স ব্যবসা নিয়ে গত কয়েক মাস ধরেই চলছে আলোচনা-সমালোচনা। প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে গ্রাহকদের কাছ থেকে নেয়া হয় বিপুল অর্থ। প্রতিশ্রুত সময়ে পণ্য না দেয়ায় বাড়তে থাকে ক্ষোভ।

বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ইভ্যালিসহ ই-কমার্স খাতে হয়রানির দায়ভার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এড়াতে পারে না। অন্যদিকে, দায় এড়ানোর সুযোগ নেই উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, ই-কমার্স খাত বন্ধ হবে না। তবে, তদারকির জন্য প্রতিষ্ঠা করা হবে পৃথক নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ই-কর্মাসের ছাড়পত্র দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ফলে কোনো অনিয়ম কিংবা প্রতারনার মতো ঘটনা ঘটলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কেই দায়িত্ব নিতে হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক কিংবা আইসিটি বিভাগসহ অন্য কোনো সরকারি সংস্থা জড়িত থাকলে তারাও দায়িত্ব এড়াতে পারেন না।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের কাজ ব্যবসায়ীদের সহায়তা করা। কিন্তু তারা যে মানুষকে লোভ দেখাচ্ছে, সেটা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দেখবে না। ১০০ টাকার জিনিস তারা ৫০ টাকায় দিতে চায় , সেটা কীভাবে সম্ভব? মানুষ লোভ সংবরণ করতে পারেনি, লোভ সংবরণ করা দরকার।

বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা দায় নিচ্ছি যে, হাজার-হাজার, লক্ষাধিক লোক ই-কমার্সের ওপর বেঁচে আছে, তাদের তো আমরা ডুবাতে পারবো না। এজন্য দায় নিয়েই আমরা চেষ্টা করছি কীভাবে সমাধান করা যায়।

দিনভর ইভ্যালি নিয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দেয়ার পর বুধবার বিকেলে সচিবালয়ে ই-কমার্স ব্যবসায় নানামুখী সমস্যা নিয়ে পর্যালোচনা ও নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণের বৈঠক ডাকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাণিজ্য, স্বরাষ্ট্র, আইন ও তথ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে দুই ঘণ্টার বেশি সময় চলা বৈঠক থেকে আসে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত। এই খাত নিয়ন্ত্রণে পৃথক সংস্থা গঠন, আইন প্রণয়ন এবং অভিযোগ সেল করবে সরকার।

বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ইভ্যালির সিইও রাসেলের সাথে কথা বলার প্রক্রিয়া খোঁজা হচ্ছে। ইভ্যালির কি পরিমাণ সম্পদ আছে তা আগে জানালেও বেনামে কোন সম্পদ আছে কিনা তাও জানতে চাওয়া হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী ও তথ্যমন্ত্রী অংশ নেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ১২টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের কয়েকশো কোটি টাকা ক্ষতির দায় নেবে না সরকার। তবে আগামী দিনে ই-কমার্স ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে থাকবে কঠোর তদারকি ব্যবস্থা।

এদিকে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতারণা, অর্থ আত্মসাৎ ও অর্থ পাচার বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। রিটে ভুক্তভোগী গ্রাহকদের অর্থ ফেরত দেয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

সুপ্রিমকোর্টের দুই আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব এবং ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার এ রিট দায়ের করেন। এতে, বাণিজ্য, অর্থ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে। রিটে বিভিন্ন ইকার্সের অপকর্মের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় তদন্তসহ গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষায় অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলা হয়েছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply