শরিফুল ইসলাম খান:
দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া উচিত হবে না বিএনপির। শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে জোরালোভাবে এমন বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলের নেতারা। এমনকি নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠায় এক দফা আন্দোলনের বিকল্প নেই বলছেন তারা। দু’দফায় ছয় দিনের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে আন্দোলন, নির্বাচনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে উঠে আসে নানা পরামর্শ। যত দ্রুত সম্ভব দল গুছিয়ে রাজপথে নামার তাগিদ দিয়েছেন বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
২০১৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে বিএনপির সবশেষ নির্বাহী কমিটির বৈঠক বসে। এর সাড়ে তিন বছর পর দলীয় কর্মপন্থা ঠিক করতে ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে গুলশানে সিরিজ বৈঠক করে বিএনপি। বৈঠকে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা নির্বাচন, আন্দোলন আর খালেদা জিয়ার মুক্তির মত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে মতামত জানান।
রুদ্ধদ্বার বৈঠকে অংশ নিয়েছেন বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। প্রশ্ন ছিলো, মাঠের নেতারা কী বার্তা দিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে।
উত্তরে তিনি বলেন, শতভাগ নেতা একটি ব্যাপারে একমত হয়েছেন যে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে তারা আর কোনো নির্বাচনে যাবেন না। এ ব্যাপারে আর কোনো ছাড় নেই। তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে আনার জন্য বিএনপির নেতাকর্মীদেরই সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। রাজপথে বিএনপি তাদের শক্তি প্রদর্শন করবে।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, আন্দোলনের বিকল্প নেই। এটি হবে এক দফার আন্দোলন। বর্তমান ক্ষমতাসীনদের হটিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে।
সাংগঠনিক কাঠামো শক্তিশালী করার পাশাপাশি কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ানোর কথা বলেছেন অনেক নেতা। দাবি উঠেছে ত্যাগী ও সাহসী নেতাদের মূল্যায়ন করার এবং নিষ্ক্রিয়দের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান বলেন, যারা দলের পদে থাকবে অথচ কর্মকাণ্ডে থাকবে না তাদেরকে বাদ দিয়ে যারা সক্রিয় থাকবে তাদেরকে পদায়নের কথা উঠেছে বৈঠকে।
চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ইস্যুতে সরব ছিলেন মাঠের নেতারা। জোট কিংবা ফ্রন্ট গঠনে আরও সর্তক থাকার পরামর্শ তৃণমূলের।
বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য এম নাসের রহমান বলেন, বিশ দলীয় জোট বা ঐক্যজোট নয়, বিএনপি একাই একশ। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে বিএনপি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে অংশ নেয়া সম্ভব না।
এই প্রথম চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ছাড়া এত বড় পরিসরে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের মতামত জেনেছে বিএনপি।
Leave a reply