পানির তলদেশে জাদুঘর! প্রথম বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন নিয়ে এমনই এক জাদুঘর তৈরি করেছে তুরস্ক। দেশটির ক্যানাকেল প্রদেশের দার্দানেলস প্রণালীতে এর অবস্থান। সেখানে সংরক্ষণ করা হয়েছে যুদ্ধচলাকালে গ্যালিপোলি উপদ্বীপে ধ্বংস হওয়া ১৪টি জাহাজের ভগ্নাংশ। সম্প্রতি ডাইভারদের জন্য উন্মুক্ত করা হয় জাদুঘরটি।
ডাইভিংয়ের দৃশ্যের সাথে আমরা কমবেশি সবাই পরিচিত। তবে চমক লাগানো ব্যাপার হলো, পানির নিচে গড়ে তোলা হয়েছে এক জাদুঘর, যা গড়ে তোলা হয়েছে গালিপোলি উপদ্বীপের দার্দানেলস প্রণালীতে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ধ্বংসপ্রাপ্ত ১৪টি জাহাজ নিয়ে বানানো হয়েছে চমকপ্রদ ওই যাদুঘরটি। যুদ্ধের সেই ইতিহাস সবার সামনে তুলে ধরতেই এ উদ্যোগ বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। ইতিহাস, আর ডাইভিংয়ের রোমাঞ্চকর অনুভূতি, দুইয়ের মিশেলে পর্যটকদের দারুণভাবে আকৃষ্ট করছে সংরক্ষণশালাটি।
ডাইভার ও পানি তলদেশের ফটোগ্রাফার আলী এথেম বলেন, পানির নিচে এমন একটি ইতিহাস নির্ভর পার্ক বানানোর জন্য বহুদিন ধরেই চেষ্টা করছিলেন তারা। অবশেষে তা সফল হওয়ায় খুশি তারা। ডাইভাররা পানির নিচে গিয়ে ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলো উপভোগ করতে পারবেন বলেও জানান তিনি।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের চরম ভয়াবহতার সাক্ষী এই গালিপোলি উপদ্বীপ। দুপক্ষের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ এক যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল এখানে। নিজেদের সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে সে যুদ্ধে অক্ষশক্তির জোট হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলো তুরস্ক।
গালিপলির সেই যুদ্ধ আজও তুরস্কের গৌরবময় ইতিহাস হিসেবে বিবেচিত হয়। ১০৬ বছর পর ঐতিহাসিক সেই যুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন উন্মুক্ত হলো সাধারণ মানুষের জন্য। সাগরের তলদেশে গিয়ে এবার দেখা মিলবে সেসব জাহাজের ভগ্নাংশ। পানির বিভিন্ন স্তরে ঘর তৈরি করে বানানো হয়েছে সংগ্রহশালা। ডাইভার ও পানি তলদেশের ফটোগ্রাফার সাভাস কারাকাস বলেন, তার দাদু ওই যুদ্ধে একটি হাত হারিয়েছিলেন। সেই টান থেকেই জাদুঘরটিতে যান তিনি। পানির নিচের মরিচা পড়া লোহার ধ্বংসস্তূপগুলো দেখে বার বার কার দাদুর কথা মনে পড়ছিল বলেও জানান তিনি।
সাগরের ২৪ মিটার গভীরে স্থাপন করা হয়েছে পার্কের প্রথম ধাপ। একেবারে তলদেশ পর্যন্ত এর বিস্তৃতি। প্রাথমিকভাবে অভিজ্ঞ ডাইভারদের মিউজিয়ামটি ভ্রমণের অনুমতি মিলেছে।
Leave a reply