আফগানিস্তানে নারীদের প্রতি ক্রমবর্ধমান সহিংসতা থেকে বাঁচতে নিজের অর্জিত সব মেডেল ধ্বংস করতে চান উনিশ বছর বয়েসী আফগান ন্যাশনাল তায়কোয়ান্দো চ্যাম্পিয়ন মার্জিয়া হামিদি। তিনি বলেন, আমাকে পেলেই মেরে ফেলবে তালেবান। এখন এসব মেডেল আমি কি করবো!
মার্জিয়া হামিদি একজন আফগান তায়কোয়ান্দো এক্সপার্ট। ১৫ বছর বয়সে তায়কোয়ান্দোতে হাতেখড়ি নেয়া মার্জিয়ার পরিকল্পনা ছিলো অনেক বড়। তিনি চাইতেন আন্তর্জাতিক মঞ্চে আফগানিস্তানের পতাকা তুলে ধরবেন তিনি। কিন্তু, গত আগস্টে তালেবান কাবুল দখলে নিলে মার্জিয়ার সে স্বপ্ন যেন আধারে মিলিয়ে যায়। কারণ, নারীদের খেলাধুলা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করেছে তালেবান। এছাড়াও, নিষেধাজ্ঞা জারি করায় সেকেন্ডারি স্কুলের ছাত্রীরা এখনও ফিরতে পারেননি ক্লাসে। ফলে দেশজুড়ে আফগান নারীদের মধ্যে সৃষ্ট ক্ষোভ যেন বাড়ছেই তালেবানের বিরুদ্ধে।
গত মাসে মার্জিয়া জানতে পারেন যে তালেবান তার সন্ধানে আছে। তারপর থেকেই বিভিন্ন জায়গায় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন জীবন বাঁচাতে। মার্জিয়া বলেন, তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আমি ভাবছি আমার মেডেলগুলো ধ্বংস করে ফেলবো, নয়তো এগুলো থাকার দায়েই হয়তো আমাকে মেরে ফেলা হবে। আমি দোটানায় পড়ে গেছি যে আমার জীবনের সেরা এ অর্জনগুলোকে আমি রাখবো নাকি ধ্বংস করে ফেলবো।
আফগানিস্তানে মার্জিয়ার মত আতঙ্কিত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন আরও অসংখ্য নারী। তাদের আশঙ্কা, ১৯৯৬-২০০১ পর্যন্ত তালেবান কট্টরপন্থার আমলে আবারও ফিরে যাচ্ছে আফগানিস্তান। কারণ, নারীদের প্রতি কোনো কঠোরতা আরোপ না করার প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন পর্যন্ত সে কথা রাখার কোনো লক্ষ্মণ তালেবানের মধ্যে দেখা যাচ্ছে না। কারণ, নিষেধাজ্ঞার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখনও ফিরতে পারেননি আফগান ছাত্রীরা। এমনকি কর্মক্ষেত্র থেকেও জোরপূর্বক ঘরে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে অসংখ্য সরকারি চাকুরিজীবী নারীকেও! আর সম্প্রতি তালেবান সদস্যরা আফগানিস্তানের নারী বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নামও পরিবর্তন করে দিয়েছে।
/এসএইচ
Leave a reply