হত্যা, ধর্ষণ, মাদক ডাকাতিসহ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অপরাধ কমাতে আশ্রিতদের মধ্যে নেতৃত্ব তৈরির ওপর জোর দিচ্ছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, ঝুঁকি নির্ণয় করে জোরদার করতে হবে ভেতর ও বাহিরের নিরাপত্তা। এখনই লাগাম টানা না গেলে পরে এসবের জন্য চড়া মূল্য দিতে হতে পারে বলেও শঙ্কা তাদের। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সম্ভাব্য সবই করা হচ্ছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সম্প্রতি রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যার পর উখিয়ার ১৮ নম্বর ক্যাম্পে আরও ছয়জন খুন। অস্থিতিশীল এই পরিস্থিতিতে উদ্বেগ তৈরি হয়েঠে বিভিন্ন মহলে। কক্সবাজার জেলা পুলিশের তথ্যানুসারে, চার বছরে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ১২ ধরনের অপরাধে এক হাজার ৩০০ মামলা হয়েছে। আর মামলাগুলোতে আসামি ২ হাজার ৮৭০ জন।
গত ৪৯ মাসে সংঘর্ষে নিহত হয়েছে ২৩৪ জন, আহত ৩৬০। এসব ভালো লক্ষণ নয় উল্লেখ করে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন বলছেন, পদক্ষেপ নিতে হবে রোহিঙ্গাদের মধ্যে নেতৃত্ব সৃষ্টির। তিনি বলেন, ভালো নেতৃত্ব তৈরি না হলে জায়গাগুলো খারাপ নেতৃত্বের হাতে চলে যাবে। এবং এই মুহূর্তে তাই হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তার মতে ওই এলাকায় নেতৃত্ব সৃষ্টি করে এটা নিশ্চিত করতে হবে যে, তারা বাংলাদেশ সরকারকে সহযোগিতা করে। আর এটা করা গেলেই ওইসব জায়গার বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। অন্যদিকে নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব) আব্দুর রশিদ মনে করেন, কেবল প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টির জন্যই এসব সহিংসতা ঘটছে তা নয়। তবে এসব সহিংসতার ঘটনা প্রত্যাবাসনে বাধা সৃষ্টি করছে। নিরাপত্তার জন্য ক্যাম্প এলাকার ভেতর-বাহিরের ঝুঁকি নির্ণয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন এই নিরাপত্তা বিশ্লেষক।
ক্যাম্পের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন সরকারও। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানালেন, বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়নের পাশাপাশি কার্যকর সব পদক্ষেপই নেয়া হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের পরে প্রত্যাবাসন নিয়ে যে আশার আলো দেখা দিয়েছিল, তা ম্লান করতেই অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে একটি চক্র।
Leave a reply