ঘৃণা-বিদ্বেষ ছড়ানো কিংবা হয়রানি করার জন্য এখন বিশ্বজুড়েই বড় ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের মতো সামাজিক মাধ্যম। ফেসবুকের নিজস্ব প্রতিবেদনই বলছে, ২০২০ সালের তুলনায় এ প্রবণতা বেড়েছে চলতি বছরে। ব্যক্তিগত আক্রোশ বা অক্ষমতা ঢাকতেই সামাজিক মাধ্যমে বিষোদগার করেন অনেকে। জেনে না জেনে সামাজিক মাধ্যমে এমন আচরণ করেন তারা। মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এগুলো মানসিকভাবে বিকৃত রুচি ও আগ্রাসী মনোভাবের পরিচয় দেয়। সবারই ভার্চুয়াল মাধ্যমে সতর্ক থাকা জরুরি।
সামাজিক মাধ্যমের ক্ষতিকর এই ধারা থেকে মুক্ত নয় বাংলাদেশও। উস্কানিমূলক বা বিদ্বেষমূলক কন্টেন্ট থেকে সহিংসতা ছড়াতেও দেখা গেছে সম্প্রতি। এমনকি খেলার মাঠে খারাপ করায়, হেইট স্পিচের নিশানা হচ্ছেন, জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্যরাও। আক্রমণ করা হচ্ছে ধর্মীয় পরিচয় নিয়ে।
সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের কাছে যমুনা নিউজ জানতে চায়, সামাজিক মাধ্যমে এমন বিদ্বেষমূলক আচরণের কারণ কী?
সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার সাকিব বিন রশীদ বলছেন, আমাদের লাইফে ভালো কিছু হচ্ছে না, ফেসবুকে মাহমুদউল্লাহকে দুই-তিনটা বাজে কথা বলে দিলাম। এতেই আমার জীবন হিট। এই যে অন্য একজনকে কষ্ট দেয়ার প্রবণতা, এর মাধ্যমে মানুষ সন্তুষ্টি পায়। পাশাপাশি যখন পোস্ট করা হেইট স্পিচে অন্যরা লাইক, কমেন্ট বা হাসির রিয়্যাকশন দেয় তখন সে আরও অনুপ্রাণিত হয়।
অন্যদিকে, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলছেন, আমাদের মনস্তাত্ত্বিক বিকাশ বা ইমোশনাল ডেভেলপমেন্টের যে জায়গা সেটিতে ঘাটতি রয়েছে।
অসহিষ্ণু ও অবমাননাকর মন্তব্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ তাদের। এক্ষেত্রে মূল ধারার গনমাধ্যমেরও থাকতে হবে দায়িত্বশীল ভূমিকা।
সাকিব বিন রশীদের মতে, রাস্তায় যখন দু’টো বাজে কথা বললে মারধরের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, ফেসবুকে সে সুযোগ নেই। ঠিক এ কারণেই ফেসবুকে হেইট স্পিচের ছড়াছড়ি। তাই গণমাধ্যমের উচিত এগিয়ে এসে সবাইকে সচেতন করা।
ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে আগ্রাসী মনোভাব আমরা দেখছি সেটিকে বলা হয়ে থাকে ‘নন-ভায়োলেন্ট অ্যাগ্রেশন’ অর্থাৎ সহিংসতা নেই কিন্তু আক্রমণ আছে।
এছাড়াও, কোনো পোস্টে লাইক, কমেন্ট বা শেয়ারের ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীদের বাড়তি সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশ্লেষকরা।
Leave a reply