স্বাস্থ্যখাতের কেনাকাটা নিয়ে আবারও প্রশ্ন

|

পুরো মহামারির সময়ে নানা অনিয়ম আর দুর্নীতির কারণে আলোচিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্যখাতের কেনাকাটায় স্বচ্ছতা নিয়ে বার বার উঠেছে প্রশ্ন। এসময় ক্রয় সংক্রান্ত নীতিমালাকে পাশ কাটিয়ে চলছে স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কেনার অসুস্থ প্রতিযোগিতা। আবারও দরপত্র আহ্বান না করে সরাসরি ক্রয় করা হচ্ছে চীনের ৯ কোটি ডিসপোজাল সিরিঞ্জ।

গেল বছরের মার্চ মাস থেকে শুরু, এখনও থেমে নেই করোনা সংক্রমণ। আক্রান্ত এবং মৃত্যুহার খানিকটা কমলেও কাটেনি অনিশ্চয়তা। যেহেতু নতুন অভিজ্ঞতা, তাই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কেনাকাটা নিয়ে শুরুর দিকে প্রশ্ন ওঠে। জরুরি প্রয়োজনে ক্রয়নীতি শিথিল করে সরাসরি পদ্ধতিতে কেনা হয় অনেক স্বাস্থ্য উপকরণ। কিন্তু প্রায় দুই বছর পরও শেষ হয়নি সেই প্রবণতা।

এবার চীনা একটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সরাসরি ক্রয় ব্যবস্থায় আনা হচ্ছে ৯ কোটি ডিসপোজেবল সিরিঞ্জ। গেল ১৭ অক্টোবর এই ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেয় অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। প্রশ্ন হচ্ছে প্রস্তুতির যথেষ্ট সময় পাওয়া সত্ত্বেও তড়িঘড়ি করে কেন এই পদ্ধতি অনুসরণ? এমন প্রশ্নে জবাবে মন্ত্রিসভা বিভাগ অতিরিক্ত সচিব শামসুল আরেফিন জানান, ভ্যাক্সিন চলে আসছে। সিরিঞ্জ না থাকলে তো টিকা দেয়া যাবে না, তাই দ্রুত কেনার জন্যই সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে কেনা হচ্ছে ডিসপোজেবল সিরিঞ্জগুলো।

মোট ১৩ কোটি ৮২ লাখ মানুষের জন্য টিকা নিশ্চিত করতে চায় সরকার। দুই ডোজ ধরলে, এ জন্য প্রয়োজন ২৭ কোটি ৬৪ লাখ ডিসপোজেবল সিরিঞ্জ। টিকা দেবার ক্ষেত্রে ইতোমধ্যেই ঠিক করা হয়েছে রোডম্যাপ। যেহেতু ধারাবাহিকভাবে টিকার সংস্থান হচ্ছে, তাহলে টিকা দেবার জন্য বড় সংখ্যাক সিরিঞ্জ কেনার ক্ষেত্রে ক্রয়নীতি শিথিল কেন? স্বাস্থ্য বিশ্লেষক ডা. লেনিন চৌধুরী বলেন, স্বাস্থ্যখাতকে এমনসব কলঙ্কের হাত থেকে রক্ষা করার এখনই সময়। স্বাস্থ্যখাতের কেনাকাটা সিন্ডিকেটের প্রভাব মুক্ত রাখতে হবে বলে জানান তিনি।

শুধু এই সিরিঞ্জই নয়। স্বাস্থ্য খাতে উপেক্ষিত হচ্ছে প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে কেনাকাটা পদ্ধতি। এক্ষেত্রে তদারকি প্রয়োজন বলে মন্তব্য করলেন সেন্টার অন বাজেট অ্যান্ড পলিসির পরিচালক অধ্যাপক ড. আবু ইউসুফ।

আর পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান মনে করেন, ক্রয় ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা দরকার। তবে জরুরি প্রয়োজনেই আপাতত সরাসরি ক্রয়পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে। জনগণের প্রতিটি টাকার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে তাগিদ দেন পরিকল্পনামন্ত্রী।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply