অবিশ্বাস্য মনে হলেও এই পৃথিবীতে এমন একটি দ্বীপ আছে যার মাটি খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। পারস্য উপসাগরীয় এই দ্বীপটি ইরানে। এটি হরমুজ দ্বীপ নামে পরিচিত। তবে এর নানা গুণাবলির জন্য ‘রেনবো আইল্যান্ড’ নামেই বেশি পরিচিত।
ইরানের এই দ্বীপের কথা বর্তমান সময়ে খুব কমই শোনা যায়। এক সময়ে অবশ্য এশিয়া ও ইউরোপের নৌ-বাণিজ্যে বন্দর হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিত এই দ্বীপ। এশিয়া-ইউরোপের বাণিজ্যে অন্য পথ খুলে যাওয়ায় হরমুজের গুরুত্ব কমে আসে। তবে সাম্প্রতিক কালে অপরূপ প্রকৃতি এবং এর বিচিত্র বর্ণের মাটি পর্যটকদের কাছে দ্বীপটির গুরুত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে।
বিবিসি’র এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই দ্বীপ অত্যন্ত খনিজসমৃদ্ধ। যে কারণে এই দ্বীপকে আবার ভূতাত্ত্বিকরা ‘ডিজনিল্যান্ড’ও বলে থাকেন। এখানে বেড়াতে আসা পর্যটকদের দ্বীপের মাটি এক বার চেখে দেখার পরামর্শ দেওয়া হয়।
খনিজ পদার্থে সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে দ্বীপটি বেশ বর্ণময়। যে কারণে এর সঙ্গে জড়িয়ে গেছে রংধনুর অনুষঙ্গ। এখানে ৭০ ধরনের খনিজ পদার্থ পাওয়া যায়। স্থানীয় গাইডদের দাবি, ৪২ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই দ্বীপের প্রতি ইঞ্চি জায়গার আলাদা আলাদা কাহিনি আছে।
কয়েক কোটি বছর আগে সমুদ্রের পানির কারণে এই দ্বীপের মাটিতে লবনের মোটা আস্তরণ পড়ে। সেই লবনের সাথে আগ্নেয়গিরির লাভার প্রতিক্রিয়ায় এর মাটিতে নানান বর্ণ দেখা যায়। দ্বীপের মাটির লোহিত রঙের হওয়ার কারণ হলো মাটিতে মিশে থাকা হেমাটাইট নামে অতিরিক্ত লৌহ অক্সাইড, যা ‘গিল্যাক’ নামেও পরিচিত।
এই মাটি শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। পাশাপাশি আবার রান্নায় মশলা হিসেবে ব্যবহার করেন স্থানীয়রা। তারা রুটির সঙ্গে সস (সুরাখ) হিসেবে এই মাটি ব্যবহার করেন। সেই রুটিকে স্থানীয় ভাষায় ‘তোমশি’ বলে।
Leave a reply