‘নৌকায় ভোট না দিলে ভোটের দিন কেন্দ্রে না এসে আত্মীয়ের বাড়িতে যান’

|

জনসভায় এমন বক্তব্য দিয়েছেন ঝিকরগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম।

স্টাফ রিপোর্টার:

নৌকা মার্কায় ভোট না দিলে ভোটের মাঠে আসার দরকার নেই, এবং আসলে প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মারতে হবে- জনসভায় এমন হুমকি দিয়েছেন যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম।

গত শুক্রবার (৫ নভেম্বর) সদর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী আমির হোসেনের নির্বাচনী জনসভায় ঝিকরগাছা ইউনিয়নের লাউজানিতে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এই হুমকি দেন।

অথচ মনিরুল ইসলাম নিজেই ২০১৯ সালে উপজেলা নির্বাচনে দলের বিরুদ্ধে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আলী রায়হানকে হারিয়ে নির্বাচিত হন।

এদিকে, মনিরুল ইসলামের এমন বক্তব্যের একটি অডিও ক্লিপসহ যশোর জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেছেন আনারস মার্কা নিয়ে নির্বাচন করা স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল বারিক। তিনি উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য। অডিও ক্লিপটি এসেছে সাংবাদিকদের হাতেও।

অভিযোগে আব্দুল বারিক উল্লেখ করেছেন, গত ৫ নভেম্বর বিকেলে সদর ইউনিয়নের লাউজানি স্কুল মাঠে নির্বাচনী জনসভায় বক্তারা প্রকাশ্যে ঘোষণা দেন, কেউ নৌকা মার্কায় ভোট না দিলে তাদের ভোটের মাঠে আসার প্রয়োজন নেই। আর যদি কেউ আসে তাহলে প্রকাশ্যে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে হবে। এছাড়া বক্তব্যে নানাবিধ ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে।

নিজের এবং কর্মীদের নিরাপত্তাহীনতার কথা উল্লেখ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল বারিক জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করেছেন। এ অভিযোগের অনুলিপি আরও দেয়া হয়েছে যশোর পুলিশ সুপার, জেলা নির্বাচন অফিসার, ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার, থানা নির্বাচন অফিসার, রিটার্নিং অফিসার এবং থানার ওসি বরাবর।

আলোচিত সেই অডিও ক্লিপে মনিরুল ইসলামকে বলতে শোনা যায়, লাউজানী, শ্রীরামপুরের মানুষ ২০১৯ সালে ডাঃ নাসির উদ্দিন বিজয়ী হওয়ার পর থেকে শান্তিতে রয়েছে। কিন্তু নৌকার প্রার্থী জিততে না পারলে নৌকার কর্মীরা আবেগের বশে জামাত-বিএনপি’র যারা তাদের আগের মতো শান্তি থাকবে না।

তিনি আরও বলেন, নৌকা মার্কায় ভোট না দিলে ভোটের মাঠে আসার দরকার নেই এবং আসলে প্রকাশ্যে নৌকায় সিল মারতে হবে।

এ প্রসঙ্গে নৌকার প্রার্থী আমির হোসেন বলেছেন, নেতা কি বলেছেন সেটা তিনি ভালো জানেন, আমি খেয়াল করিনি। তবে সেই নির্বাচনী সমাবেশের কথা স্বীকার করেছেন প্রার্থী আমির হোসেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল বারিক বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম জনসভায় ওই বক্তব্য দেয়ায় তার কর্মীরা ভয়ে আছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম বলেন, আমি এ ধরনের কোনো বক্তব্য দেইনি। এ সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। ২০১৯ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সে নির্বাচনে দল থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থীতার বিরুদ্ধে কোনো নির্দেশনা না থাকায় প্রার্থী হয়েছিলাম।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply