ভুল ঠিকানায় চলে আসা অন্ধ ডলফিনটিকে বাঁচাতে রুদ্ধশ্বাস অভিযান

|

সিন্ধু নদের অন্ধ ডলফিন। পথ ভুলে চলে এসেছে অন্য ঠিকানায়। যেটা স্বাভাবিকভাবে তার বসবাসের উপযোগী নয়।

পথহারা এই ডলফিনকে নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে পাকিস্তানের সিন্ধু ওয়াইল্ড লাইফ। তবে সেজন্য পাড়ি দিতে হবে ৫১ মাইল পথ। সিন্ধু ওয়াইল্ডলাইফের ফিল্ড অফিসার মীর আখতার হুসেইন জানালেন, বেশ সতর্কতার সাথে ওই ডলফিনটিকে নির্দিস্ট স্থোন পর্যন্ত পৌঁছে দিতে হয়েছে তাদের। তিনি বলেন, খেয়াল রাখতে হয়, চামড়া যেন কিছুতেই শুকিয়ে না যায়। যেন এমন বোধ হয় যে সে পানির নিচেই আছে। তবে ব্লো হোলের মধ্যে যাতে পানি ঢুকে না যায় সেবিষয়েও সতর্ক থাকতে হয়। কারণ এর মাধ্যমেই নিঃশ্বাস নেয়।

পানি ছাড়া বেশিক্ষণ টিকতে পারে না প্রাণীটি। তাই খুব সাবধানে যথাসম্ভব দ্রুত নিয়ে যেতে হয় চেনা পরিবেশে।

১৯৯২ সাল থেকে এপর্যন্ত ২শ ডলফিনকে উদ্ধার করেছে সিন্ধু ওয়াইল্ডলাইফ। যার মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৩০টির। তবে ২০১৯ সালের পর থেকে তাদের প্রতিটি অভিযানই সফল হয়েছে। ওয়াইল্ডলাইফের ওই ফিল্ড অফিসার জানালেন, দুঘণ্টার বেশি সময় লাগে। শব্দ বা পরিবেশগত কারণে যাতে ক্ষতি না হয় তাও মাথায় রাখতে হয়েছে।

প্রজন্মের পর প্রজন্ম সিন্ধু নদের ঘোলা পানিতে বিচরণ করা এ প্রজাতির ডলফিনের দৃষ্টিশক্তি নেই। সোনার সিস্টেম বা প্রতিধ্বনি ব্যবহার করে চলাফেরায় অভ্যস্ত এ ব্লাইন্ড ডলফিন। একসময় সিন্ধুর পানিতে অবাধে ঘুরে বেড়ালেও এখন সীমিত হয়ে গেছে তাদের আবাসস্থল। সরু খালে ঢুকে পড়ে বা জেলেদের পেতে রাখা জালে আটকা পড়ে অহরহই প্রাণ যায় এগুলোর।

সিন্ধু প্রদেশের বন্যপ্রাণী কর্মকর্তা জাভেদ মাহার জানালেন, ৮০ থেকে ১২০ সেকেন্ডের মধ্যে একবার পানি থেকে মাথা বের করে এরা। তবে মাছ ধরার জালে আটকা পড়লে আর তা সম্ভব হয় না। গত দুবছরে এমন অনেক ডলফিনের মৃত্যু হয়েছে।

১৯৭২ সালে সিন্ধুর ডলফিনকে বিপন্ন প্রজাতি হিসেবে ঘোষণা করে ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ড-ডব্লিউডব্লিউএফ। সেসময়ই হারিয়ে যাওয়া ডলফিনকে আশ্রয় দিতে একটি রিজার্ভ তৈরি করে সিন্ধু প্রশাসন। মেলে সুফলও। ১৯৭২ এ ১৩২টি থেকে ২০১৯ এ ডলফিনের সংখ্যা দাঁড়ায় ১৮১৬-তে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply