নিচতলা, দোতলা, বা মাঝের ফাঁকা জায়গা- দর্শকরা যেদিকে চেয়েছেন, দেখেছেন নাটকের এক-দুইশ কলা-কুশলীর নান্দনিক উপস্থাপনা। ৭১ মিনিটের রোমহর্ষক সেই নাট্যায়নে কী নেই? বেয়নেটের খোঁচায় মায়ের সামনে সন্তানকে হত্যা, সন্তানের সামনে মায়ের ধর্ষণসহ হানাদারদের বীভৎস সব নির্যাতনই উঠে আসে সেখানে।
আয়োজনের পটভূমিটা পঞ্চাশ বছর আগের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা হল। একাত্তরের ৯ মাস পাকবাহিনীর ঘাঁটি ছিল এটি। ব্লকে ব্লকে ছিল নির্যাতন সেল। হলটির আলো, বাতাস, মাটি যেন আজও তার প্রত্যক্ষ সাক্ষী। সেসময়ের নির্যাতনের ভয়াবহতা পাঁচ দশক পর নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতেই তুলে ধরতে সে হলেই মঞ্চস্থ হলো নাটক ‘জোহা হল কথা কয়’।
শিক্ষক শিক্ষার্থীসহ নানা পেশার ৩ হাজারের বেশি মানুষ একসাথে উপভোগ করেন ইতিহাসের সেই কালবেলার মঞ্চায়ন। যুদ্ধকালে এই হলে বন্দী হয়ে, নির্যাতন সয়ে, প্রাণে বেঁচে যাওয়া তিন মুক্তিযোদ্ধা তুলে ধরেন তাদের অভিজ্ঞতা। পাণ্ডুলিপি, আলো, সঙ্গীত, শব্দের নান্দনিক উপস্থাপনা ও শিল্পীদের অভিনয়-দক্ষতায় স্বাধীনতার জন্য কতটা ত্যাগ সইতে হয়েছিল আমাদের, তা দেখে দর্শকরা ফেলেছেন চোখের জল।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে অধ্যাপক ড. আতাউর রহমান রাজুর নির্দেশনায় মঞ্চায়িত হয় নাটকটি। এমন একটি আয়োজনের পর মুগ্ধতা প্রকাশ করে শিল্পকলা একাডেমির প্রধান লিয়াকত আলী লাকি বলেন, গণহত্যার থিয়েটারটির মাধ্যমে নতুন রকম উপস্থাপনার একটি দৃষ্টান্ত তৈরি হলো।
সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ভার্চুয়াল মাধ্যমে এই নাটকের প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি।
Leave a reply