স্টাফ রিপোর্টার, মাদারীপুর:
প্রায় ২ মাস পর মাদারীপুরের শিবচের মুখ ঝলসানো অবস্থায় পাওয়া রেজাউল করিমের হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। এমদাদুল মুন্সী নামক এক ঘাতককে কেরাণীগঞ্জ থেকে গ্রেফতারের পর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উম্মোচিত হয়েছে। ঘাতক এমদাদের দেখানো মতে ঘটনাস্থল থেকে রেজাউলের ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বগুড়ার সদর উপজেলার চকসুত্রাপুর গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে মো. রেজাউল করিম (৪০) ও কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার চর আমলা গ্রামের সরোয়ার হোসেনের ছেলে রোলাস মালিথা রনি (৪০) কর্মসূত্রে কয়েক বছর আগে নেপাল থাকতো। সেখান থেকেই বন্ধুত্ব। আড়াই বছর আগে দেশে আসার পরও তাদের যোগাযোগ ছিল। ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে রেজাউলকে পদ্মা সেতুর প্রকল্পে কাজ দেয়ার কথা বলে রনি শিবচরের মাদবরচরে তার শ্বশুর বাড়িতে আসতে বলে।
গত ১০ সেপ্টেম্বর রেজাউল ৩ হাজার টাকা নিয়ে শিবচরের মাদবরচর আসে। রনি তার সহযোগী এমদাদ মুন্সীকে (২৩) প্রকল্পর বস সাজিয়ে রেজাউলকে নিয়ে রাতে শিবচরের মাদবরচরের কালাই হাজী কান্দি একটি নির্জন এলাকার পরিত্যক্ত ঘরের কাছে নিয়ে যায়। রাত গভীর হলে মোবাইলে কথা বলার অভিনয় করে সরে গিয়ে রেজাউলকে পেছন থেকে গলায় ফাঁস দেয়। রেজাউল ছুটাছুটি করলে ২ জনে মিলে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এরপর এমদাদের গোংরানোর কণ্ঠ নকল করে রেজাউলের ছবি তুলে তার পরিবারের কাছে পাঠিয়ে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। কিন্তু দরিদ্র পরিবারটি দিতে পারেনি। এরপর ২ ঘাতক সটকে পড়ে।
গত ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় কালাই হাজী কান্দি গ্রামের টিনসেডের ওই পরিত্যক্ত ঘর থেকে দুর্গন্ধ পেয়ে শিবচর থানা পুলিশকে খবর দেয়া হয়। পরে শিবচর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হাত পা বাঁধা ও মুখমণ্ডল দাহ্য জাতীয় পদার্থ দিয়ে ঝলসানো অবস্থায় অজ্ঞাতনামা হিসেবে রেজাউলের লাশটি উদ্ধার করে।
পরে শিবচর থানা পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় নিহতের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে হত্যার রহস্য উদঘাটনে নামে। পুলিশ সোমবার ঢাকার কেরাণীগঞ্জের কবুতরপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে এমদাদুল হক মুন্সীকে গ্রেফতার করে। এমদাদুল পুলিশের কাছে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। গ্রেফতারকৃত এমদুদুলকে মঙ্গলবার মাদারীপুর আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
ইউএইচ/
Leave a reply