২০১৮ সালের এক রায়ে রদ হয় সংবিধানের ৩৭৭ ধারা, যেটি মোতাবেক ভারতে সমকামিতা ছিল একটি ফৌজদারি অপরাধ। সমকামিতাকে বৈধতা করার লড়াইয়ে শামিল ছিলেন অ্যাডভোকেট সৌরভ কিরপালও। যে পিটিশনের ফলে এই রায়, সেটির কাউন্সেলর ছিলেন তিনি।
এবার সেই সৌরভ কিরপালই গড়তে যাচ্ছেন ইতিহাস। ভারতের সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়াম তাকে দিল্লি হাইকোর্টের বিচারক হিসেবে সুপারিশ করেছে। নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হলে তিনিই হচ্ছেন ভারতের প্রথম প্রকাশ্য সমকামী বিচারক।
তার নিয়োগের পরবর্তী ধাপগুলোতে তেমন জটিলতা নেই ঠিকই। কিন্তু এতদূর আসার পথ মসৃণ ছিল না মোটেও। ২০১৭ সালেও নিয়োগের জন্য সুপারিশকৃত হয়েছিলেন সৌরভ। কিন্তু তার সমকামী পরিচয়টি প্রকাশ্যে আসার কারণে সেটি বাতিল হয়ে যায়।
সে সময় কিছু সূত্রের দাবি ছিল, সৌরভের সঙ্গী একজন ইউরোপিয়ান, যিনি ভারতে অবস্থিত সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের কর্মী। বিষয়টিকে সার্বভৌম একটি বিচারব্যবস্থার বিচারক পদের জন্য ‘স্বার্থের সংঘর্ষ’ হিসেবে গণ্য করেন অনেকে।
নিজের ২০ বছরের পুরনো সঙ্গীর পরিচয়কে ‘অজুহাত’ বানানোকে অনর্থক হিসেবে অভিহিত করে সৌরভ তখন দাবি করেন, আর কিছুই নয়, বরং শুধুমাত্র নিজ যৌনরুচির জন্যই পদ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে তাকে।
এর আগে ২০১৭ সালে অক্টোবরে দিল্লি হাইকোর্টের কলেজিয়াম প্রথম সৌরভ কিরপালের পদোন্নতির সুপারিশ করেছিল। তারপর আরও বেশ কয়েকবার তার নাম উঠে এসেছিল। কিন্তু প্রত্যেকবারই বিলম্বিত হয়েছে সৌরভের পদোন্নতির প্রক্রিয়া। চলতি বছরের মার্চে সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদে দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি পদে সৌরভ কিরপালের পদোন্নতি নিয়ে কেন্দ্র সরকারের অবস্থানও জানতে চেয়েছিলেন।
দিল্লির স্টিফেন কলেজ থেকে পাশ করে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন নিয়ে পড়াশোনা করেছেন সৌরভ কিরপাল। স্নাতকোত্তর পাশ করেছেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। দুই দশকের বেশি সময় ধরে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীও তিনি।
Leave a reply