গাইবান্ধায় মা ও সৎ ভাইকে ঘরে আটকে রেখে আগুন দিল ছেলে

|

গাইবান্ধা প্রতিনিধি:

গাইবান্ধা পৌর শহরের একটি ভাড়া বাসার ঘরে মা ও সৎ ভাইকে আটকে রেখে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছেলে অনিক মিয়ার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় মা মামনি বেগম ও তিন বছরের শিশু ছেলে প্রাণে বেঁচে গেলেও আগুনে পুড়ে গেছে ঘরের খাট, টিভি ও ফ্রিজসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র।

বুধবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যার দিকে গাইবান্ধা পৌর শহরের খানকাহশরীফ এলাকার পানির ট্যাংকির পাশে আমিনুল ইসলামের ভাড়া দেয়া বাসার নিচ তলায় এ ঘটনা ঘটে। টিন সেডের তিন রুমের ওই বাসাটি ভাড়া নেয় সাদুল্লাপুর উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান।

অভিযুক্ত অনিক মিয়া (১৯) মামনি বেগমের পূর্বের স্বামী আবদুর রশিদ প্রধানের তৃতীয় ছেলে। অনিক তার বাবা আবদুর রশিদ প্রধানের সঙ্গে গাইবান্ধা পৌর শহরের কুটিপাড়া এলাকার বাড়িতে থাকেন।

মা মামনি বেগমের অভিযোগ, অনিকসহ তিন ছেলে রেখে ২০১৬ সালে জিয়াউর রহমান বিয়ে করেন মামনি বেগমকে। বর্তমানে তার কোলে তিন বছরের আরেকটি ছেলে সন্তান রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে প্রথম স্বামীর ছেলে অনিক তার কাছে টাকা দাবিসহ নানা কারণে অত্যাচার করে আসছিলো। বুধবার সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ বাসায় এসে তাকে গালিগালাজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে ঘরে আগুন দিয়ে বাইরের দরজার ছিটকানি লাগিয়ে পালিয়ে যায় অনিক। পরে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে দরজা ভেঙ্গে তাদের উদ্ধার করেন। টাকা চেয়ে না পাওয়ায় সৎ ভাইসহ তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ঘরে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটায় অনিক।

এ বিষয়ে মুঠফোনে কথা হয় মামনি বেগমের স্বামী জিয়াউর রহমানের সঙ্গে। তার অভিযোগ, সম্প্রতি চুরির মামলায় জেল হাজত থেকে ছাড়া পায় অনিক। তিন-চারদিন আগে রাতের বেলায় ভাড়া বাসায় এসে তাকেসহ স্ত্রী মামনিকে হত্যার হুমকি দেয় অনিক। সেদিন থেকে ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। অনিকের দেয়া আগুনের ঘটনায় স্ত্রী ও শিশু সন্তান প্রাণে বেঁচে গেলেও ঘরে থাকা অন্তত ৫০ হাজার টাকার অসবাবপত্র পুড়ে গেছে। এ ঘটনায় অনিকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করবেন বলেও জানান তিনি।

বাসা মালিক আমিনুল ইসলাম জানান, হঠাৎ তিন তলা বাসার নিচের টিন সেড ভাড়া ঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। পরে স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে আগুনের ঘটনা ঘটেছে। তবে ঘটনার পর ভাড়াটিয়া জিয়াউর রহমানকে বাসা ছেড়ে দিতে বলেছি।

আগুনের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গাইবান্ধা ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। আগুনে প্রায় ৫০ হাজার টাকার আসবাবপত্র পুড়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কিভাবে এই আগুন দেয়া হয় তা তদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।

তবে আগুনের বিষয়টি জানা নেই সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুদুর রহমানের। তিনি মুঠফোনে জানান, এ ঘটনায় কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply