মারিয়া হোসেন:
চীনের সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী ঝাং গাওলির বিরুদ্ধে সম্প্রতি যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তুলেছিলেন দেশটির জনপ্রিয় টেনিস তারকা পেং শুয়াই। এখন তাকেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে কি ক্ষমতাসীন কম্যুনিস্ট নেতার দিকে আঙুল তোলায় নিরুদ্দেশ হতে হলো টেনিস খেলোয়াড়কে? উঠেছে এমন প্রশ্ন।
উইম্বলডন আর ফ্রেঞ্চ ওপেন জেতা চীনের জনপ্রিয় টেনিস তারকা পেং শুয়াই। ৫ নভেম্বর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ওয়েইবো’তে তিনি ফেলে দেন শোরগোল। অভিযোগ করেন- ক্ষমতাসীন কম্যুনিস্ট পার্টির নেতা ঝাং গাওলির বিরুদ্ধে। লিখেন- কয়েক বছর আগে জোরপূর্বক যৌন সম্পর্ক স্থাপনে তাকে বাধ্য করেন, ৭৫ বছর বয়সী রাজনীতিক।
পোস্টটি আপলোডের আধঘণ্টার মধ্যেই গায়েব! চীনা ইন্টারনেটে মিলছে না ৩৫ বছরের শুয়াইয়ের কোনো তথ্যেই। নিখোঁজ খোদ টেনিস তারকা। পরিবারের সদস্যরাও জানেন না তিনি কোথায়।
পেং শুয়াই’র অভিযোগের পর চীনে শুরু হয়েছে আরেক ‘মি-টু’ আন্দোলন। নারীরা ফাঁস করছেন হয়রানির গোমর। যা নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা দুনিয়া। বিষয়টি নিয়ে এখনো নিশ্চুপ বেইজিং। সরকারের প্রতিক্রিয়া না আসায় স্বাভাবিকভাবেই বাড়ছে চাপা উত্তেজনা।
চিন্তিত ক্রীড়ামহলও সমালোচনার ঝড় সোশ্যাল মিডিয়ায়। টুইটারে ট্রেন্ডিং হ্যাশট্যাগ- ‘হোয়ার ইজ পেং শুয়াই?’ উইমেন টেনিস অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে তদন্তের আহ্বানও।
উইমেন টেনিস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান স্টিভ সিমন বলেন, চীনা রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে যৌন অভিযোগ অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নেয়া উচিত। সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি। আমাদের খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা এবং গুরুত্ব নিশ্চিত করতে হবে।
বিশ্বের এক নম্বর টেনিস খেলোয়াড় নোভাক জোকোভিচও জানান, উদ্বেগ। রীতিমতো সোচ্চার টেনিস দুনিয়া। চীনা ক্রীড়াবিদ যেনো ন্যায়বিচার পান, সেই দাবিই উঠছে সব মহলে।
নোভাক জোকোভিচ বলেন, সত্যি বলতে কি, তার নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়াটা আকস্মিক ঘটনা। আমি ভীষণভাবে চাই, ওকে খুঁজে পাওয়া যাবে। তার থেকেও বড় কথা, ওকে যেনো ঠিকঠাক অবস্থায় খুঁজে পাওয়া যায়। যা ঘটেছে তা সত্যিই ভয়ঙ্কর।
আগের দশকের মাঝামাঝিতে ক্যারিয়ারের সেরা সময় পার করেছেন শুয়াই। পরপর দু’বার উইমেন ডাবলসে গ্রান্ড স্ল্যাম জিতেছেন। যার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ, সেই ঝাং গাওলি ২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত চীনের উপ-প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। প্রেসিডেন্টেরও ঘনিষ্ঠ সহযোগী। সে কারণে গাওলির বিরুদ্ধে অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই।
ইউএইচ/
Leave a reply