ইউরোপীয় ইউনিয়নে ফাটল ধরাতে চাইছে বেলারুশ। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্যই সীমান্তে তারা সৃষ্টি করেছে অভিবাসন সংকট, এমনটাই অভিযোগ করেছে ইইউ। সংস্থাটির দাবি, নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হয়েও ঘৃণ্য কৌশল পাল্টাচ্ছে না দেশটি। এদিকে, প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো বলেছেন, প্রতিবেশির সাথে যুদ্ধ-সহিংসতায় জড়াতে চান না তিনি। এ কারণেই, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের দিচ্ছেন সর্বোচ্চ সহায়তা।
প্রতিদিনই পোল্যান্ড-বেলারুশ সীমান্তে বাড়ছে প্রাণহানি। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা, খাদ্য সংকট আর ন্যূনতম চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ করছে শিশু থেকে বৃদ্ধ। সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে পৃথিবীর আলো না দেখা এক নবজাতকও। তবে এই মানবিক সংকট কোনোভাবেই গলাতে পারছে না প্রতিবেশি দুই রাষ্ট্রনেতার মন। বরং, পরস্পরের দিকে অভিযোগের তীর ছুঁড়ে তারা ব্যস্ত দোষারোপের রাজনীতিতে।
বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো বলেন, পোল্যান্ডকে বলতে চাই, আমরা বর্বর নই। কোনো সংঘর্ষে জড়াতে চায় না বেলারুশ। কারণ, সীমা লঙ্ঘন করলে যুদ্ধ অবধারিত। তাতে শুধু দুর্যোগই বাড়বে। তাই অভিবাসনপ্রার্থীদের সহযোগিতা করে যাচ্ছি। তারা যদি ইরাক-সিরিয়ায় ফিরতে চান, সেই ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আবার পোল্যান্ড-জার্মানি ঢুকতে চাইলেও পাবেন সমান সহায়তা।
অন্যদিকে পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ম্যাথুশ মোরাভিয়েস্কি বলেন, এটা কি শুধুই অভিবাসন সংকট? একে হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই। কারণ, বেলারুশ সরকারের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহৃত হচ্ছেন অভিবাসনপ্রার্থীরা। তাতে মানবপাচারকারীরাও পাচ্ছে হয়রানি করার সুযোগ। ইইউ যখন নিষেধাজ্ঞার জন্য প্রস্তুত সে সময়ও সীমান্তের দিকে অভিবাসনপ্রার্থীদের ঠেলে দিচ্ছে বেলারুশ।
ইউরোপীয় কমিশন বলছে, জোটে ফাটল ধরানো এবং আঞ্চলিক প্রভাব জোরদার করতেই বেলারুশ এহেন কূটকৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। যার শাস্তি হবে ভয়াবহ।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন দেন লিয়ঁ বলেন, বেলারুশ প্রশাসনের জঘন্য আচরণ ইউরোপের পাশাপাশি মার্কিন প্রেসিডেন্টেরও নজর কেড়েছে। এটা সাজানো অভিবাসন সংকট; যার আড়ালে প্রতিবেশিদের উপর ছড়ি ঘোরাতে চাইছে লুকাশেঙ্কো প্রশাসন। জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় দেশগুলো প্রতিক্রিয়া জানাতেই পারে। কিন্তু, মৌলিক অধিকার এবং আন্তর্জাতিক বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করা যাবে না।
ইউরোপীয় কমিশনের তথ্য অনুসারে, চলতি বছরই ৪০ হাজারের বেশি মানুষ বেলারুশ ভূখণ্ড ব্যবহার করে জার্মানিতে ঢোকার চেষ্টা চালিয়েছে। যাদের বেশিরভাগই ইরাক-আফগানিস্তান ও সিরিয়ার নাগরিক।
Leave a reply