সুন্দরবনে বাঘের মুখে বন্ধু, বাবলুর লড়াইয়ে বেঁচে ফিরলেন দু’জনই

|

মাছ, কাঁকড়া ধরা হয়েছে সারাদিন; জলে-জঙ্গলে ঘুরে ঘুরে। কাজকর্ম শেষে সন্ধায় নৌকায় বসে রান্না করছিলেন দুই মৎস্যজীবী বন্ধু। কিন্তু আচমকা জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসে একটি বাঘ। কিছু বুঝে ওঠার আগেই এক মৎস্যজীবীর ঘাড়ে বাঘের থাবা।

মিহির সরদার নামের ওই মৎস্যজীবীর মুখটাই কামড়ে ধরে বাঘ, আর জঙ্গলের দিকে টেনে নিয়ে যেতে থাকে! সঙ্গী বাবলু হালদারের অবস্থা তখন ভয়াবহ। একদিকে বাঘের ভয়, অন্যদিকে সঙ্গীর সাক্ষাৎ মৃত্যু! মুহূর্তে নিজের কর্তব্য ঠিক করে ফেলেন তিনি। কোনও কিছু না ভেবে, নিজের প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন বাঘের সামনে, সঙ্গীকে বাঁচাতে। উঠে বসেন বাঘের ঘাড়ে! বিপদের তোয়াক্কা না করে চলতে থাকে তুমুল ধস্তাধস্তি। ভারতের সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াল তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে এমন তথ্য।

বাবলুর এই কাণ্ডে হঠাৎ ঘাবড়ে যায় বাঘটিও। মুখের শিকার মিহিরকে ছেড়ে সে এবার পাল্টা আক্রমণ করে বাবলুকে। এত বড় সাহস, তার পিঠে চড়ে বসেছে! বাবলুও ছাড়ার পাত্র নন, একটানা গায়ের জোরে কিল-ঘুঁষি চালাতে থাকে বাঘের উপর। বাঘের পাল্টা আক্রমণে তিনিও ক্ষত-বিক্ষত হন। ততক্ষণে বাঘের কামড় থেকে ছাড়া পেয়ে নিজের সর্বশক্তি দিয়ে লড়ছেন মিহিরও! বেশ খানিক্ষণ দুই মানুষ আর বাঘে প্রবল লড়াইয়ের পরে একসময় পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে বাঘ ছেড়ে দেয় দুই জলজ্যান্ত শিকারের আশা। চরম হুঙ্কার দিতে দিতে মিলিয়ে যায় গভীর জঙ্গলে।

পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন অংশে গত ৮ ডিসেম্বর এই ঘটনা ঘটে। বাঘের পিঠে চড়ে বসে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বন্ধু মিহিরকে বাঁচান বাবলু। তারপর লড়াই করে বাঁচলেন দু’জনেই।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply