বিজয়ের ৫০ বছরে এসে স্বাধীনতা যুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখা এক বীর মুক্তিযোদ্ধা হেরে গেছেন প্রতারক চক্রের কাছে। তার বসতভিটে আর প্রধানমন্ত্রীর উপহার বীর নিবাস জাল দলিল করে বিক্রি করে দিয়েছে সেই চক্র। রাতারাতি জমির নামজারিও করা হয়েছে। রক্তের দামে প্রতি ইঞ্চি মাটি কিনে আনা এই বীর মুক্তিযোদ্ধার শেষ সম্বল সামান্য জমিটুকুও এখন বেহাত।
নারায়ণগঞ্জের দাউদপুর ইউনিয়নের হিরনাল গ্রামের মোস্তফা কামাল ফকির। একাত্তরে তিনি ছিলেন পাকিস্তানি মিলিটারির সৈনিক। ছিল আগ্নেয়াস্ত্রের সাথে সখ্যতা। স্বাধীনতার ডাকে জীবন বাজি রেখে এনেছিলেন দেশের স্বাধীনতা। তবুও স্বাধীন দেশের মাটিতে, মাথা গোঁজার কোনো ঠাঁই ছিল না মোস্তফার। মুক্তিযুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধা কামালের অবদানের কথা জেনে ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে বীর নিবাস নামে ঘর উপহার দেন।
তবে সুখ বেশিদিন সয়নি মুক্তিযোদ্ধা কামালের। সে বছরই এক প্রতারকচক্র জাল দলিল তৈরি করে হাতিয়ে নেয় তার সম্পদ। শুরু হয় থানা-পুলিশ আর আদালতের বারান্দায় প্রতিদিনের যাতায়াত। কান্নায় ভেঙে পড়ে এই বীর মুক্তিযোদ্ধা যমুনার ক্যামেরার সামনে বললেন তার ভোগান্তি আর অসহায়ত্বের কথা।
একবার রায় মুক্তিযোদ্ধার পক্ষে এলেও আবার মোস্তফাসহ বেশ কয়েকজনের জমিতে নজর পড়ে প্রতারকদের। এবার কোনো ধরনের নোটিশ না দিয়ে প্রতারক চক্রের নামে জমি খারিজ করে দেয় সরকারি দফতর। এমনকি মুছে দেয়া হয় প্রধানমন্ত্রীর নাম ফলকও।
আরও পড়ুন : বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীতে জানানো হয়েছে রাষ্ট্রীয় শ্রদ্ধা
দাউদপুর ভূমি অফিসের তহসিলদার মজিবর রহমানকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, যাচাই না করে তার পক্ষে কিছুই করা সম্ভব নয়।
তবে প্রতিবেদন করতে ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর মিথ্যা নামজারির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে ভূমি অফিস। মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফার বীর নিবাস ফিরিয়ে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তারা।
/এডব্লিউ
Leave a reply