মীর মুশফিক আহসান:
আফগানিস্তানে চরম অর্থনৈতিক সংকটের বলি হচ্ছেন নারীরা। একদিকে খাবারের সংকট, অন্যদিকে নেই কাজের সুযোগ। সবমিলিয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার আফগান নারীরা। এরইমধ্যে বিভিন্ন স্থানে কাজ এবং খাবারের দাবিতে বিক্ষোভে নেমেছেন অনেকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসলে দেশটিতে বড় ধরনের বিপর্যয়ের শঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।
খাবারের অভাবে অসুস্থ নাতি লড়ছে মৃত্যুর সাথে। অথচ অসহায়ভাবে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কিছুই করার নেই দাদি তাজ বেগমের। তিনি বলেন, বাজারে দুধের কোনো সরবরাহ নেই। খাবার না পেয়ে আমার নাতি মারা যাচ্ছে। আমরাতো কোনোরকমে এটা সেটা খেয়ে থাকতে পারি। কিন্তু বাচ্চাতো দুধ ছাড়া আর কিছুই খেতে পারে না। চোখের সামনে নাতির মৃত্যু আর সহ্য হয় না।
তালেবান ক্ষমতা নেয়ার পর থেকেই চরম অর্থনৈতিক সংকটে আফগানিস্তান। অথচ ঘরের বাইরে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন না নারীরা। একদিকে অর্থ এবং খাবারের সংকট, অন্যদিকে নেই কাজ করার সুযোগ। সব মিলিয়ে বিক্ষুব্ধ সাধারণ আফগান নারীরা।
আরও পড়ুন: জাপানের ওসাকায় ভবনে আগুন, দগ্ধ ২৭ জনের মৃত্যু
বিক্ষোভকারীরা জানান, তালেবান সরকার যদি আমাদের না দমাতে পারে, তাহলে পৃথিবীর কোনো শক্তিই আমাদের আটকে রাখতে পারবে না। আমাদের অবস্থান পরিষ্কার, ২০ বছর আগের আফগানিস্তানে ফিরে যেতে চাই না, যেখানে নারীদের কোনো অধিকার নেই।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নারীদের শিক্ষা এবং কাজের জন্য তালেবান সরকারের উচিত কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া। এর ব্যত্যয় হলে প্রতিটি পদক্ষেপে সংকটে পড়বে দেশটি।
আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই বলেন, আগের চেয়ে বর্তমান তালেবান সরকার অনেক পরিবর্তিত। নারীরা এখন নিজেদের ইচ্ছাতেই ঘরের বাইরে বের হতে পারছে। নিজেদের দাবি দাওয়া নিয়ে প্রতিবাদ করতে পারছে। আর তালেবানকেও বুঝতে হবে, সবার সমন্বিত অংশগ্রহণ ছাড়া সরকার পরিচালনা করা সম্ভব নয়। বিশেষ করে নারীদের যদি কাজের সুযোগ না দেয়া হয়। কিংবা মেয়েদের জন্য শিক্ষাগ্রহণে বাধা সৃষ্টি করা হয় তাহলে সাধারণ মানুষ কখনওই বর্তমান সরকারকে গ্রহণ করবে না।
যদিও এর আগে তালেবান সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আফগানিস্তানে নারীদের কাজ কিংবা শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই। যদিও বাস্তব চিত্র একেবারে ভিন্ন।
ইউএইচ/
Leave a reply