বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল যে ইমরুল কায়েসকে তার দলে চান, এটা পুরনো খবর। শোনা গেছে, তার কথামতোই নাকি এখন ঘরোয়া ক্রিকেটে চার নম্বরে ব্যাট করেন ইমরুল। আর এতেই তৈরি হয়েছে কিছু প্রশ্ন। সাম্প্রতিক সময়ে বেছে বেছে ওয়ানডে খেলা সাকিব আল হাসানের জায়গায় নাজমুল হোসেন শান্ত ও সৌম্য সরকারকে দেখা গিয়েছে চলতি বছরের দুটি ওয়ানডে সিরিজে। প্রশ্ন উঠেছে, এই পরিস্থিতিতে ইমরুল কায়েসকে ওয়ানডে দলে টেনে কেবল মুশফিকুর রহিমই নয়, অনিয়মিত সাকিব আল হাসানের জায়গাটাও টালমাটাল করতে চান তামিম ইকবাল?
গত ২৪ ডিসেম্বর বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের প্রেস ব্রিফিংয়ের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক বলেন, তামিম ইকবাল তার বিশ্বকাপ কেন্দ্রিক পরিকল্পনায় দলে চান ইমরুল কায়েসকে। এছাড়া আগামী ওয়ানডে সিরিজগুলোতেও বাঁ-হাতি এই ব্যাটারকে দলে রাখার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন তামিম। সেই সাথে, ইমরুলকে যেন আরও ভালোভাবে সুযোগ দেয়া হয়, তা নিশ্চিত করাটাও বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়কের চাওয়া। জবাবে বিসিবি সভাপতি বলেন, ওয়ানডেতে ৪ নম্বরে ব্যাট করেন মুশফিক। তবে কি তামিম চাইছে মুশফিকের জায়গাটা ইমরুলকে দিয়ে দেয়া হোক?
এবার দেখা যাক, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের ৩ ও ৪ নম্বর জায়গা দুটিতে কারা ব্যাট করেছেন। ২০২১ সালে ৪টি ওয়ানডে সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে ৩ ও ৪ নম্বরে ব্যাট করেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও সাকিব আল হাসান। নিউজিল্যান্ড সিরিজে আবার এই জায়গা দুটিতে আসেন সৌম্য সরকার ও মুশফিকুর রহিম। এরপর শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ের সাথে দুটি সিরিজে সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম এই গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দুটিতে ফিরে আসেন। জিম্বাবুয়ে সিরিজে ব্যাট ও বল হাতে দারুণ পারফর্ম করে সিরিজ সেরা নির্বাচিত হন সাকিব আল হাসান।
সম্প্রতি সাকিব আল হাসানও জানিয়ে দিয়েছেন, তিন ফরম্যাটের খেলা চালিয়ে যাওয়া তার কাছে এখন অনেকটাই অসম্ভব। তাছাড়া, সুপার লিগের অন্তর্ভুক্ত নয় এমন ওয়ানডে ম্যাচগুলো খেলার ব্যাপারেও অনীহা রয়েছে এই দেশ সেরা অলরাউন্ডারের। অন্যদিকে, নাজমুল হোসেন শান্ত এবং সৌম্য সরকার দলে জায়গা প্রতিষ্ঠা করার জন্য চালিয়ে যাচ্ছেন লড়াই। এই দুই ব্যাটারের মধ্যে কেউ যদি পারফরমেন্স দিয়ে ৩ নম্বর জায়গাটিকে পাকাপোক্ত করে ফেলতে পারেন তবে, ইচ্ছে মাফিক ওয়ানডে সিরিজ খেলার জায়গায় একটি প্রশ্নবোধক চিহ্ন দেখলেও দেখতে পারেন সাকিব আল হাসান। অন্যদিকে, মুশফিক এখন আর কিপিং গ্লাভস পরেন না। লিটন দাস ও নুরুল হাসান সোহান দলে থাকায় কেবল ব্যাটার হয়ে দলে থাকা মুশফিকুর রহিমের ব্যাটেও নেই রান। সেক্ষেত্রে, পঞ্চপাণ্ডবের মধ্যে সম্পর্কের ফাটল তৈরি হওয়ার বাস্তবতায় দল থেকে সাকিব ও মুশফিককে ছাঁটাই করার কোনো পরিকল্পনা কি করছেন তামিম ইকবাল? এমন প্রশ্ন আপাতদৃষ্টিতে অতি কল্পনা মনে হলেও ক্রিকেটীয় দৃষ্টিকোণ এবং কথিত পঞ্চপাণ্ডবের মধ্যকার দূরত্ব নিয়ে কানাঘুষার কারণে একে উড়িয়ে দিচ্ছেন না অনেক বোদ্ধাই। সংবাদ সম্মেলনে ইমরুলের চারে ব্যাট করা বিষয়ে এক সংবাদকর্মীর প্রশ্নের জবাবে স্বয়ং বোর্ড সভাপতির শেষ লাইন ছিল, এসব ক্রিটিক্যাল বিষয়ে আমি কথা বলতে চাই না।
এমন না বলা অনেককিছু দিয়েই দুয়ে দুয়ে চার মেলাচ্ছেন কেউ কেউ।
Leave a reply