ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মাকে হত্যা; আদালতে ছেলের স্বীকারোক্তি

|

ছবি: প্রতীকী।

আখাউড়া প্রতিনিধি:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌরশহরের শান্তিনগর গ্রামে বৃদ্ধা জোহরা খাতুন হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়েছে। পুলিশ জানায়, প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য বৃদ্ধা জোহরা খাতুনের ছেলে জমির খাঁ নিজের গর্ভধারিণী মাকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছেন বলে আদালতে স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছেন।

সোমবার (৩ জানুয়ারি) দুপুরে থেকে বিকাল পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জহিরুল ইসলামের আদালতে ঘাতক জমির খাঁ তার মাকে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। স্বীকারোক্তি শেষে জমির খাঁ’কে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান।

মিজানুর রহমান যমুনা টেলিভিশনকে জানান, আখাউড়া পৌরশহরের শান্তিনগর গ্রামে বাড়ির সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত জমির খাঁ’র সঙ্গে তার চাচা প্রতিবেশি বজলু খাঁ’র মাঝে বিরোধ চলে আসছে। আদালতের রায়ে জমির খাঁ’র পক্ষকে বাড়ির সম্পত্তির দখল বুঝিয়ে দেয়া হয়।
সম্পত্তির দখল বুঝে পেলেও প্রতিপক্ষ বজলু খাঁ ও তার লোকজন সম্পত্তি ফিরে পেতে জমির খাঁ’কে মিথ্যা মামলা-হামলাসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছিলো। ওইসব কারণে প্রতিপক্ষ বজলু খাঁ’কে ফাঁসাতে পরিকল্পনা আঁটেন জমির খাঁ।

রোববার সকাল থেকে এর জের ধরে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। দুপুরের দিকে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে জমির খাঁ তার বৃদ্ধা মাকে দা দিয়ে মাথায় কুপিয়ে হত্যা করে। এসময় হত্যার পর রক্তমাখা দা ঘরের সিলিংয়ের ওপর রেখে দেয় জমির খা। নিহতের রক্তাক্ত লাশ ওই ঘরের এক কোনে পড়ে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যান। লাশ দেখে পুলিশসহ স্থানীয় লোকজনের হত্যা নিয়ে সন্দেহ হয়। পরে পুলিশ হত্যার রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করে। রোববার সন্ধ্যায় নিহত জোহরার ছেলে জমির খাঁ’সহ প্রতিপক্ষের ৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের কথাবার্তায় গড়মিল থাকায় পুলিশের সন্দেহ গভীর হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে জমির খাঁ সংঘর্ষের সময় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে তার বৃদ্ধা মাকে হত্যার কথা স্বীকার করে।

পরে সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জহিরুল ইসলামের আদালতে ঘাতক জমির খাঁ তার মাকে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। স্বীকারোক্তি শেষে জমির খাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।

স্থানীয় ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ জান্নাত হোসেন ঈশান যমুনা টেলিভিশনকে জানান, হত্যাকাণ্ডের পর লাশ দেখে অনেকেই সন্দেহ করেছিল। পুলিশ হত্যার রহস্য উদঘাটন করায় অনেক নিরীহ মানুষ হয়রানি থেকে বেঁচে গেল।

জেডআই/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply