তাড়াহুড়া করে দেশ ছাড়ার সময় গত বছর আফগানিস্তানের কাবুল বিমান বন্দরে এক আফগান বাবা-মা হারিয়ে ফেলেছিলেন দুই মাস বয়সী সন্তানকে।
এরপর তারা ভেবেছিলেন, সন্তানের মৃত্যু হয়েছে পায়ের চাপায়। তবে প্রায় পাঁচ মাস পর এবার সেই সন্তান ফিরেছে স্বজনদের কোলে!
গত বছরের আগস্টে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান। কাবুল ঘিরে ফেলে তারা। এর কয়েক দিনের মধ্যে আফগানিস্তান ত্যাগ করে মার্কিন বাহিনী। ওই সময় মার্কিনিদের সঙ্গে অনেক আফগানও পরিবারসহ যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমায়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, তাদের মধ্যে আফগানিস্তানের মার্কিন দূতাবাসের নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে কাজ করা মির্জা আলি আহমাদিও ছিলেন। তিনি পাঁচ সন্তান ও স্ত্রীসহ যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেয়ার সময় দুই মাস বয়সী সন্তান সোহাইল আহমাদিকে হারিয়ে ফেলেন।
মির্জা আহমাদি বলেন, যখন মার্কিন সেনা ও নাগরিকেরা আফগানিস্তান ত্যাগ করছিল, তিনিও তাদের সঙ্গে যাওয়ার জন্য কাবুল বিমানবন্দরে যান। তিনি সোহাইলকে বিমানবন্দরের দেয়ালের ওপর দিয়ে সেনাবাহিনীর পোশাক পরা এক ব্যক্তির কাছে দেন।
এর ঠিক দেড় ঘণ্টা পর আহমাদি তার বাকি চার সন্তানসহ বিমানবন্দরে ঢুকতে পেরেছিলেন। কিন্তু ততক্ষণে নিখোঁজ সোহাইল। তারা আর ছেলেকে খুঁজে পাননি।
উপায়ন্তর না পেয়ে কাবুল থেকে সোহাইলকে ছাড়াই মির্জা আহমাদি পরিবারসহ যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পর কয়েক মাস ধরে তারা সোহাইলের খোঁজ করছিলেন।
গত নভেম্বরে সোহাইলের ছবিসহ একটি নিখোঁজ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় রয়টার্সে। এরপর শিশুটির খোঁজ মেলে কাবুলে। হামিদ সাফি নামের এক ট্যাক্সিচালক সোহাইলকে কাবুল বিমানবন্দরে পান। এরপর থেকেই তিনি নিজের সন্তানের মতো সোহাইলকে লালন-পালন করছেন।
শিশুটিকে পাওয়ার জন্য আবেদন করেন মির্জার স্বজনেরা। মীমাংসার জন্য আলোচনা চলতে থাকে। শিশুটিকে তালেবান পুলিশ নিয়ে নেয় তাদের হেফাজতে। এর প্রায় দুই মাস পর সোহাইলকে তালেবান পুলিশ তার স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দেয়। শনিবার প্রায় পাঁচ মাস পর সোহাইল আত্মীয়দের কোলে ফিরেছে।
তবে আফগানিস্তানে কোনো মার্কিন দূতাবাস না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো কার্যকর না থাকায় এ ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।
সূত্র: রয়টার্স
এনবি/
Leave a reply