শাবিপ্রবিতে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের গণঅনশনের ঘোষণা

|

ছবি: সংগৃহীত

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগের দাবিতে এবার গণঅনশনের ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (২২ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় এক সংবাদ সম্মেলন গণঅনশনের সিদ্ধান্তের কথা জানান আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আজ রাত থেকেই এই গণঅনশন শুরু হবে। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন শিক্ষার্থী ইয়াসির সরকার। তিনি বলেন, অনশনকারী শিক্ষার্থীদের কষ্ট ও অসুস্থতা আমরা কেউ মেনে নিতে পারছি না। আমাদেরও কষ্ট হচ্ছে। তাই তাদের সাথে আমরাও গণঅনশন শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

ইয়াসির আরও বলেন, আমাদের এখানে একটি কাগজ থাকবে। সেখানে নাম লিপিবদ্ধ করে যে কেউ এই অনশনে যোগ দিতে পারবেন। ইতোমধ্যে ইফতেখার আল মাহমুদ, সামিউল এহসান শাফিন ও সামিয়া ফারজানা নামে ৩ জন গণঅনশনের জন্য নাম লিপিবদ্ধ করেছেন বলে জানান তিনি।

এর আগে, গত বুধবার থেকে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগ দাবিতে অনশন শুরু করেন শাবির ২৩ শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় ১৬ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে হাসপাতাল থেকে ফিরে ৩ শিক্ষার্থী আবার উপাচার্যের বাসবভনের সামনে অনশনে যোগ দিয়েছেন। এছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিক্ষার্থীরাও অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশনে থাকা বাকীদের শারিরীক অবস্থাও অবনতির দিকে। তাদের স্যালাইন দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সন্ধ্যায় শিক্ষমন্ত্রী ডা. দীপু মনির সাথে আলোচনায় বসেছেন শাবির শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধি দল। সেই আলোচনা চলাকালেই অনশনস্থলের পাশে সংবাদ সম্মলনে এসে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ইয়াসির সরকার বলেন, গত ১৫ জানুয়ারি পুলিশ আমাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থানে লাঠিচার্জ করে, রাবার বুলেট ও শব্দ বোমা নিক্ষেপ করে। এতে আহত অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী যখন হাসপাতালে একজন আইসিইউতে তখন উপাচার্য বিশ্ববিদ্যািলয় বন্ধ ঘোষণা করেন। এবং এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের দোষারোপ করেন।

তিনি আরও বলেন, এসব ঘটনাই প্রমাণ করে যে ফরিদ উদ্দিন আহমদ একজন মিথ্যুক, নির্লজ্জ ও অযোগ্য ব্যক্তি। তাই আমরা তাকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে অনশন শুরু করি। কিন্তু অনশনের প্রায় ৭৫ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও এবং অনেক শিক্ষার্থীর জীবন সঙ্কটাপন্ন হয়ে পড়লেও এখন পর্যন্ত উপাচার্য পদত্যাগ করেননি।

শিক্ষামন্ত্রীর সাথে আলোচনা প্রসঙ্গে ইয়াসির বলেন, গতকাল শিক্ষামন্ত্রী আমাদের আলোচনার প্রস্তাব দেন। শিক্ষার্থীরা তাতে সম্মত হলেও অনশনরত শিক্ষার্থীদের শারীরিক অবস্থা এবং অন্যদের দৈহিক ও মানসিক অবস্থা বিবেচনা করে ঢাকায় যেতে রাজী হইনি। মন্ত্রীকে সিলেটে এসে শিক্ষার্থীদের এই দুরবস্থার চিত্র সচক্ষে এসে দেখার অনুরোধ জানাই অথবা ভার্চুয়ালি বৈঠক করার অনুরোধ জানাই। তবে এ ব্যাপারে আর আমাদের সাথে কোন যোগােযাগ করা হয়নি।

তিনি বলেন, ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগপত্র সচক্ষে না দেখা পর্যন্ত আমাদের আমরণ অনশন চলবে। এতে যদি কোন শিক্ষার্থী এতে মারা যায়, তবে এ মৃত্যুর দায় ফরিদ উদ্দিন আহমদকে নিতে হবে।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply