আন্দোলনকারীদের সাথে কথা বলতে শাবিপ্রবিতে যাচ্ছেন জাফর ইকবাল দম্পতি

|

ছবি: সংগৃহীত

সংকট নিরসনে শাবিপ্রবির আন্দোরনকারিদের সাথে কথা বলতে সিলেটে যাচ্ছেন অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল দম্পতি।

গত ২১ জানুয়ারি ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল তার কলামে লেখেন, আন্দোলন যতক্ষণ পর্যন্ত শ্লোগান, মিছিল, উত্তপ্ত বক্তৃতা এবং দেশাত্মবােধক গানের মাঝে সীমাবদ্ধ থাকে সেটাকে ভয় পাওয়ার কিছু নেই কিন্তু সেটি যদি শেষ পর্যায়ে চলে যায়, যখন ছাত্রছাত্রীরা আমরণ অনশন করার সিদ্ধান্ত নেয় তখন সেটি খুবই বিপজ্জনক। তাদের প্রচণ্ড ক্রোধ, এবং ক্ষোভ তখন একটা গভীর দুঃখবােধ এবং অভিমানে পাল্টে যায়। হঠাৎ করে তারা টের পায় তারা আসলে একা, তাদের পাশে কেউ নেই। ‘আমরণ’ কথাটি থেকে ভয়ংকর কোনাে কথা আমি জানি না, বড় মানুষেরা সেটাকে কৌশলী একটা শব্দ হিসেবে ব্যবহার করেন, কিন্তু এই বয়সী ছাত্রছাত্রীরা তাদের তীব্র আবেগের কারণে শব্দটাকে আক্ষরিক অর্থে ব্যবহার করে। শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবনগুলাের নামকরণ করা নিয়ে একবার বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল তখন। আমাদের ছাত্রছাত্রীরা শহিদ মিনারে অনশন করে বিশ্ববিদ্যালয়টি খােলার ব্যবস্থা করেছিল। অভুক্ত ছাত্রছাত্রীদের দুর্বল শরীরে যখন খিচুনি হতে থাকে সেই দৃশ্য সহ্য করার মতো নয়। (পরে তারা আমাকে তাদের অভিজ্ঞতার গল্প শুনিয়েছে, দিনরাত তারা বােধ-শক্তিহীনভাবে পড়ে আছে, অন্য কোনাে অনুভূতি নেই, শুধুমাত্র এক প্লেট খাবারের স্বপ্ন দেখছে! আমি তাদের সেই কষ্টের কথাগুলাে কখনাে ভুলতে পারি না।) যে কারণেই হােক, আমার এককালীন ক্যাম্পাসে ছাত্রছাত্রীরা আবার সেই অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে বিষয়টি চিন্তা করে আমি খুবই অশান্তি অনুভব করছি।

আরও পড়ুন: আমার প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়টি ভালাে নেই

গত বুধবার থেকে শুরু হওয়া আন্দোলনকারীদের এ আমরণ অনশনে এখন পর্যন্ত কোনো সমাধান না আসায় অনশনরত শিক্ষার্থীদের নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২৮ জন অনশনরতদের মধ্যে ১৯ জনের স্বাস্থ্যের অবনতি হওয়ায় তারা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে এবং ৯ জন ক্যাম্পাসে অনশন করছেন।

অনশনকারীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে আজ (২৫ জানুয়ারি) আন্দোলনকারীরা জরুরি সমাবেশ থেকে অনশনকারীদের অনশন থেকে ফিরে আসার অনুরোধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে সেখান থেকে অনশনস্থলে এসে তাদের এই প্রস্তাব অনশনকারীদের কাছে উপস্থাপন করে এবং অনশন ভেঙে ফেলার অনুরোধ জানানো হয়। এমন অনুরোধ শুনেই একজন অন্যজনকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়ে। অনশনকারীরা তাদের সিদ্ধান্তের জন্য এক ঘণ্টা সময় চান। পরে রাত ৯ টায় অনশনকারীদের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন শাহরিয়ার আবেদিন। তিনি জানান, উপাচার্যের পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাবেন তারা। এ সময় তাদের আন্দোলনে সহায়তাকারীদের গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তাদের মুক্তির দাবি জানান।

আরও পড়ুন: আন্দোলনকারীদের অর্থ সহায়তা; শাবিপ্রবির ৫ শিক্ষার্থীকে আটকের পর পুলিশের কাছে হস্তান্তর


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply