সাখাওয়াত হোসেনকে সিইসি করার প্রস্তাব দিলেন ডা. জাফরুল্লাহ

|

কাগমারী সম্মেলন দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা।

সাখাওয়াত হোসেনকে সিইসি করার প্রস্তাব দিলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। সাবেক নির্বাচন কমিশনার সাখাওয়াত হোসেন, বদিউল আলম মজুমদার এবং সুলতানা কামালসহ নির্বাচন কমিশনের জন্য ৫ জনের নাম প্রস্তাব করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত ‘স্বাধীনতা ও মুক্তি সংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতা মওলানা ভাসানীর ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলন দিবস’ উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনা সভায় উপস্থিত থেকে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) সভাপতি মোস্তফা জামাল হায়দার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর,ভাসানী অনুসারী পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধা নঈম জাহাঙ্গীর, মুক্তিযোদ্ধা আক্তার হোসেন। সভা পরিচালনা করেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের হাবীবুর রহমান রিজু।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, সার্চ কমিটির পকেটে কী কাগজ আছে, নির্বাচন কমিশনার কারা হবে? আজকে যদি প্রকৃত নির্বাচন করতে হয়, গণতন্ত্র ফেরত দিতে হয়, জনগণকে ভোটের অধিকার ফেরত দিতে হয় তাহলে শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন দরকার। বর্তমান আইনে সেই ব্যবস্থা নেই। এমন অবস্থায় অনেক রাজনৈতিক দলই সার্চ কমিটির কাছে কারো নাম প্রস্তাব করেনি। তবে কয়েকটা নাম আপনারা বিবেচনায় আনতে পারেন; সাখাওয়াত হোসেন আগে নির্বাচন কমিশনার ছিলেন। তাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করা হলে তিনি পথঘাট চেনেন, উনি শক্তভাবে কাজগুলো করতে পারবেন। তার সাথে সাবেক সেনা কর্মকর্তা ইকবাল করিম ভূঁইয়া, তিনি আজিজ নয়, সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে তার সুনাম আছে। বদিউল আলম মজুমদার ও বিচারপতি নাজমুন আরা, সুলতানা কামালের মতো সত্যিকারের সজ্জন ও সাহসী লোকজনদের কমিশনে‌ আনলে কমিশন কিছুটা বিতর্কমুক্ত থাকবে। সার্চ কমিটিতে যাদের নাম এসেছে তারা তাদের সম্পদের হিসাব দেয়নি। তাদের উপরে মানুষের আস্থা থাকবে কী করে? তাদের পকেটে কি কাগজ আছে? বক্তব্যে এমন প্রশ্ন তোলেন ডা. জাফরুল্লাহ।

সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশকে ১৭টি প্রদেশে বিভক্ত করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, জাতীয় সরকার, সর্বদলীয় সরকার কিংবা নির্দলীয় সরকার যেটাই করুন না কেন, অন্ততপক্ষে তাদের দু’বছর সময় দিতে হবে। তাহলে সংবিধানের যেসব ত্রুটি আছে সেগুলোর পরিবর্তন হবে। তবে মূল কথা হচ্ছে যে, এত কেন্দ্রিকতা দিয়ে আসলে দেশ চলতে পারে না। ১৮ কোটি মানুষের বাংলাদেশ, এটাকে অন্তত ১৭টি প্রদেশে বিভক্ত করতে হবে। তাহলে শত ফুল ফুটবে। আপনাদের অনেকেই মুখ্যমন্ত্রী হবেন, মন্ত্রী হবেন। কোনো প্রদেশের মন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রী বলবে, আমরা শিক্ষার দিকে নজর দেবো, কেউ বলবে আমরা কৃষক ও শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করবো। বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় রেখে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, জালেম কখনো ক্ষমতা ছাড়ে না, তাদেরকে ক্ষমতা ছাড়াতে হয়। আজকে বিএনপি তাদের অফিসে কোনো সভা সমাবেশ করতে পারছে না। সেখান থেকে তাদেরকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। কাজেই তাদের (বিএনপির) উচিত, যেদিন ধরে নিয়ে যাবে তার পরের দিনে আরও বড় পরিসরে আন্দোলনের ডাক দেয়া। আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তাদের পতন ঘটাতে হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদানকালে অসুস্থ বোধ করেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। এ কারণে বক্তব্য সংক্ষিপ্ত করেন। তিনি বলেন, আজ কী করে বলছেন সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্য চাই। উনারা দুইটি আলাদা জোট, আপনারা তৃতীয় আলাদা একটা জোট করেন। তাহলে বিরোধী দল আলাদা হয়ে যাবার কারণে শক্তি দুর্বল হয়ে যাবে? বরং ভালো করে বোঝেন, আমরা সেইভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি যাতে মূল লড়াইটা দুর্বল না হয়। মূল লড়াই যেন শক্তি পায়। এই সেই বিবেচনায় ঐক্য বদ্ধ হচ্ছি।

আন্তর্জাতিক সমর্থনে ফাটল ধরায় আওয়ামী লীগ এখন কম্পমান। তাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, এক সময় আন্তর্জাতিক শক্তিগুলো সবাই একচেটিয়াভাবে তাদের সমর্থন করেছিল। সেই শক্তির জোরে তারা রাষ্ট্র, জনগণের ট্যাক্সের টাকায় চালিত প্রশাসনকে দলীয় শক্তিতে পরিণত করেছে। মানুষের ওপর ত্রাস সৃষ্টি করে, দমন নিপীড়ন চালিয়েছে। এখন আন্তর্জাতিক শক্তির সমর্থনে ফাটল ধরেছে। আওয়ামী লীগ এখন কম্পমান।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply