পাইলটের অবহেলায় বড় ধরনের ক্ষতির মুখে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ। জ্বলে গেছে ইঞ্জিনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বিষয়টি রীতিমত চেপেও গেছেন উড়োজাহাজের ক্যাপ্টেন। তা পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ধরা না পড়লে পরবর্তী উড্ডয়নেই হতে পারতো বড় ধরনের দুর্ঘটনা। মেরামত না করা পর্যন্ত আগামী দুই থেকে তিন মাস বসিয়ে রাখতে হবে বিমানটি। ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশ মেরামত’সহ সব মিলিয়ে ১০০ কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হতে পারে বলে ধারণা করছে কর্তৃপক্ষ।
ঘটনা ১ ফেব্রুয়ারির। সিলেট থেকে ঢাকা আসার পথে পাইলট কোনো কারণ ছাড়াই পাওয়ার লিভারটি ১০০ ভাগের বেশি ইমার্জেন্সি পাওয়ার অর্থাৎ ওয়াল টু ওয়াল ব্যবহার করেছেন। সামনের মনিটরে বিপদ সংকেত জ্বলে ওঠার পর তড়িঘড়ি করে স্বাভাবিক পজিশনে নিয়ে আসা হয় লিভারটি। ততক্ষণে পেরিয়ে গেছে ১৩ সেকেন্ড। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আর কিছুক্ষণ থাকলেই উড্ডয়নরত অবস্থাতেই বিমানে ধরতে পারতো আগুন। এমনকি ঝুঁকি ছিল বিস্ফোরণেরও।
সাধারণত বিশেষ প্রয়োজনে বা বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে বিমানের পাওয়ার লিভারের সর্বোচ্চ ব্যবহার করেন পাইলট। অথচ, ‘আকাশতরী নামের ড্যাশ-এইট মডেলের বিমানটির পাইলট কোনো কারণ ছাড়াই ব্যবহার করেছেন তা। ল্যান্ডিং এর পর ঘটনাটি দ্রুত লগবইতে লিখিতভাবে জানানোর কথা থাকলেও ক্যাপ্টেন রুবায়েত সেটি করেননি। এ অবস্থায় পরবর্তী ফ্লাইটের উড্ডয়নেই ভয়াবহ দুর্ঘটনার শঙ্কা ছিল। কিন্তু রক্ষা হয় ইঞ্জিনিয়ার শাখার নিয়মিত চেকিং এ।
বিমান দুর্ঘটনা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ক্যাপ্টেন (অব.) সালাহ উদ্দিন এম রহমতুল্লাহ বলেন, পাইলটের বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো উচিত ছিল। কিন্তু এটি পাইলটদের অভ্যাস তারা লগবুকে তথ্য রেজিস্টার করে না। অথচ লগবুকে এসব তথ্য লিখে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি লগবুকে লিপিবদ্ধ করার রেগ্যুলেশনও আছে।
প্রসঙ্গত, ড্যাশ-এইট কিউ ফোর জিরো জিরো মডেলের ৭৪ আসনের ব্রান্ড নিউ বিমানটি গত বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় আনা হয়। এ ঘটনায় গাফিলতি এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিমান কর্তৃপক্ষ।
Leave a reply