৫০ বছর বয়সে আলিম পাশ করলেন সিরাজুল ইসলাম

|

ছবি: সংগৃহীত

স্টাফ করেসপনডেন্ট, খাগড়াছড়ি:

যদি অদম্য ইচ্ছা শক্তি থাকে তাহলে সাফল্য আসবেই। ঠিক এমনটাই প্রমাণ করলেন পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির সিরাজুল ইসলাম (৫০)। তিনি খাগড়াছড়ি ইসলামিয়া আলিম মাদরাসা থেকে এবার আলিম পাশ করেছেন। সিরাজুল ইসলাম মাটিরাঙ্গা উপজেলার সীমান্তবর্তী আছালংয়ের ইসলামপুর এলাকার বাসিন্দা। তিনি তাইন্দং ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান।

সিরাজুল ইসলামের প্রতিবেশীরা বলছেন, পড়াশোনার কোনো বয়স নেই সেটাই প্রমাণ করলেন সিরাজুল ইসলাম। তিনি সব ধরনের ভয়, সংকোচকে পেছনে ফেলে খাগড়াছড়ি ইসলামিয়া আলিম মাদরাসা থেকে প্রাইভেট পরীক্ষার্থী হিসেবে আলিম পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে জিপিএ ২.১৪ পেয়েছেন। পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর বাবা-ছেলে-মেয়ের পাশের খবরে আনন্দের বন্যা বইছে সীমান্তঘেঁষা আছালং ইসলামপুর এলাকার মো. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর বাড়িতে।

পাশের খবরে প্রতিবেশী ও স্বজনরা অভিনন্দন জানাতে ছুটে আসেন তাদের বাড়িতে। স্বজনদের কেউ কেউ নিয়ে আসেন ফুল ও মিষ্টি। তার বাড়িতে ভিড় করছেন প্রতিবেশীরা। তাদের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত স্থানীয়রা।

সিরাজুল ইসলামের ছোট মেয়ে মাহমুদা সিরাজ বলেন, ইচ্ছাশক্তি আর অধ্যবসায় যে সাফল্য এনে দিতে পারে তার অনন্য দৃষ্টান্ত আমার বাবা। আমাদের ভাই-বোনের ফলাফলের চেয়ে বাবার ফলাফলে আমরা গর্বিত।

দীর্ঘ বিরতির পর লেখাপড়ার তাগিদ অনুভব করলেন কেনো জানতে চাইলে মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার কোনো বয়স নেই। ফলাফল ঘোষণার পর ছেলে-মেয়ে আর নাতির সাথে নিজের কৃতিত্বের খবর পাওয়ার সময়টা আমার জীবনের সবচেয়ে সুখকর মুহূর্ত, এটা কখনো ভুলে যাবার মতো নয়। নিজের লেখাপড়া চালিয়ে যাবার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ছেলে-মেয়েসহ পরিবারের সবাই চাইছে আমি লেখাপড়া অব্যাহত রাখি।

মাটিরাঙ্গা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, সিরাজুল ইসলামের পাশের খবর নতুন প্রজন্মের জন্য একটি ম্যাসেজ। শিক্ষার কোনো বয়স নেই।

এর আগে ৮৭ সালে তাইন্দং মোহাম্মদিয়া দাখিল মাদরাসা থেকে দাখিল পাশ করেন মো. সিরাজুল ইসলাম। এরপর পারিবারিক প্রয়োজনে আর পড়ালেখা করতে পারেননি তিনি। বৃদ্ধ বাবা, মায়ের দেখভাল করার পাশাপাশি অল্প বয়স থেকেই জমিজমা দেখাশুনার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। পরিবারের একমাত্র ছেলে সন্তান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।

ইউএইচ/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply