ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ নতুন করে আয়ের পথ দেখাচ্ছে স্পেনের লা পামা দ্বীপের বাসিন্দাদের। ভয়ংকর আগ্নেয়গিরি কুমব্রে ভিয়েজা এবং বিপর্যস্ত দ্বীপটি হয়ে উঠেছে পর্যটন আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। ডয়চে ভেলের খবর বলছে, এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে অঞ্চলটির পর্যটন খাতকে নতুনভাবে সাজাতে কাজ শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ।
৭শ বর্গ কিলোমিটারের দ্বীপ লা পামা যেন এক বিশালাকার ছাইয়ের স্তূপ। কুমব্রে ভিয়েজা আগ্নেয়গিরির তিন মাসব্যাপী ধংসযজ্ঞে বিপর্যস্ত পুরো এলাকা। যতদূর চোখ যায় কেবলই ধূসরতা। লাভার গনগনে আগুন থেকে রক্ষা পেলেও ছাইয়ের নিচে চাপা পড়ে আছে বেশিরভাগ ঘরবাড়ি। কৃষিনির্ভর দ্বীপটিতে পেশা হারিয়ে বিপাকে অনেকে। তবে সব অনিশ্চয়তা ছাপিয়ে আগ্নেয়গিরি খুলে দিয়েছে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার। ছাইয়ের স্তূপ দেখতেই দলে দলে লা পামায় ছুটে যাচ্ছেন পর্যটকরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সঠিক ব্যবস্থাপনা দ্বীপবাসীর জন্য বয়ে আনবে সুফল।
লা পামার ট্যুরিস্ট গাইড বাসো লানজোন বললেন, তার কাছে এই দ্বীপের ছাইয়ের স্তুূপ এখন স্বর্ণের মতো। বললেন, এখানে অনেক সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি। প্রচুর পর্যটক এখন লা পামায় আসতে চাচ্ছেন। স্থানীয়দের জন্য বিষয়টা যতটা কষ্টের পর্যটকদের জন্য সেটা না। তারা আগ্নেয়গিরি কাছ থেকে দেখতে পাচ্ছেন, লাভা দেখছেন এবং বিষয়গুলো উপভোগও করছেন।
কুমব্রে ভিয়েজার ভয়াবহতার চিত্র রোমাঞ্চকর অনুভূতি যোগাচ্ছে পর্যটকদের। ধোঁয়া ওঠা আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ আর লাভার বিপুল পরিমাণ ছাই, সবকিছুই আকর্ষণ করছে তাদের। পর্যটকরা বলছেন, আগ্নুৎপাত থেমে গেছে। কিন্তু যে ধোঁয়া বা আগুন এখনও দেখা যাচ্ছে তা খুবই রোমাঞ্চকর।
এরই মধ্যে দ্বীপটির পর্যটনখাতকে গড়ে তুলতে বিশেষ পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। যা বাস্তবায়নে ১ কোটি ডলার বরাদ্দ দিয়েছে স্পেন সরকার। দ্বীপটির স্থানীয় সরকারপ্রধান মারিনো হারনান্দেজ জাপাতা বলেন, প্রকৃতির এই বিপর্যয়ের সুযোগ আমাদেরকে কাজে লাগাতে হবে। আমাদেরকে দুটো দিকে খেয়াল রাখতে হবে। যোগাযোগ স্থাপন আর পর্যটকদের থাকার সুব্যবস্থা করা। এখনও ছাই ঢাকা বিভিন্ন হোটেলের অন্তত ৭শ রুম। ধ্বংসযজ্ঞ বাদ দিয়ে আগ্নেয়গিরি থেকে যদি কোনো সুবিধা নেয়া যায় তা হল পর্যটকদের আগ্রহ।
আর তাই বিদেশি পর্যটকদের পরিবহন, বাসস্থানসহ বিভিন্ন চাহিদা পূরণে ঢেলে সাজানো হচ্ছে পুরো লা পামা দ্বীপটির অবকাঠামো।
/এডব্লিউ
Leave a reply