কী হতে পারে ইউক্রেন সঙ্কটের সম্ভাব্য ভবিষ্যত

|

ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ার সাথে সামরিক উত্তেজনা আগে থেকেই ছিল, এর মাঝেই ইউক্রেনের দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ককে হঠাৎ করেই স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়ায় উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে বিশ্ব রাজনীতিতে। শহর দুটিতে শান্তি বাহিনী পাঠানোর নামে রুশ সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয়ার ঘটনার আকস্মিকতায় অনেকটাই হতবিহল পশ্চিমা শক্তি।

যতোই যুদ্ধের দামামা বাজুক, ইউক্রেনে আচমকা কোনো সামরিক অভিযান চালাবে না রাশিয়া। বিশ্লেষকরা বলছেন, সামরিক-অর্থনৈতিকসহ নানামুখী চাপ সৃষ্টি করে ইউক্রেনে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে চায় মস্কো। যার মূল উদ্দেশ্য, দেশটির বর্তমান পশ্চিমা সমর্থিত সরকারের পতন। দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে হঠাৎ করেই স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়নি রাশিয়া, এমনটাও মনে করেন বিশ্লেষকরা। তাদের ধারণা, আন্তর্জাতিক মহলের চাপও এখন আর রাশিয়াকে ফেরাতে পারবে না।

এ পরিস্থিতিতে চলছে নানামুখী হিসেব-নিকেশ। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেন ইস্যুতে নিজেদের দীর্ঘ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে রাশিয়া। এখন অস্থিতিশীলতা তৈরি করে ইউক্রেনকে চাপে ফেলে দেশটির সরকারের পতন ঘটানোই মূল উদ্দেশ্য মস্কোর।

সামরিক বিশ্লেষক ও ইউরোপে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন কমান্ডার বেন হজ বলেন, শক্তিশালী অজগর যেমন তার শিকারকে চেপে ধরে ধীরে ধীরে হত্যা করে, ইউক্রেনকে নিয়ে রাশিয়ারও একই পরিকল্পনা। মস্কো চাইছে সামরিক ও অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করে কিয়েভকে অস্থিতিশীল করতে। সেই সাথে ইউক্রেনের প্রশাসনেও বিপর্যয় সৃষ্টি করবে রাশিয়া। ইউক্রেনের বর্তমান সরকারের পতন হলেই অনুগতদের ক্ষমতায় বসাবেন পুতিন।

বিশ্লেষকদের মতে, ইউক্রেন ইস্যুতে সিদ্ধান্ত নিতে অনেকটাই দেরি করেছে ফেলেছে পশ্চিমা শক্তি। কারণ এরইমধ্যে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে নিজের অবস্থান সুসংহত করেছে মস্কো।

কারনেগি ইউরোপের সিনিয়র ফেলো জুডি ডেম্পসে বলেন, ২০১৪ সাল থেকেই ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিজের কাছে রেখেছে রাশিয়া। এক্ষেত্রে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে ব্যবহার করছে তারা। এসব বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো মূলত রাশিয়ার ছায়া সামরিক বাহিনী হিসেবে কাজ করে। এখন লুহানস্ক আর দোনেৎস্ক নিয়ে মস্কো যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে ইউরোপীয় নেতাদের আসলে করার আর কিছুই করার নেই। তবে রাশিয়াকেও নানামুখী চাপের মুখে ফেলার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে পশ্চিমা শক্তি। ফলে মস্কোর জন্যও কঠিন হয়ে উঠবে আধিপত্য বিস্তারের পথ।

তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতি এখন দুপক্ষের জন্যই কঠিন। কারণ নিজের অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণে ইউক্রেনের পক্ষে চাইলেই কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব না। সেটা ইউরোপীয় ইউনিয়ন কিংবা ন্যাটোর সদস্য, দুই ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। অন্যদিকে নতুন করে অর্থনৈতিক অবরোধসহ নানামুখী চাপে পড়বে রাশিয়াও।

এ অবস্থায় পশ্চিম বিরোধী শক্তিগুলোর নতুন জোটও হতে পারে, এমন ধারণাও করছেন বিশ্লেষকরা।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply