জীবনসঙ্গী নির্ধারণে আরও বেশি স্বাধীনতা পেতে যাচ্ছে তিউনিশিয়ার নারীরা। সরকারি আইন পরিবর্তনের কারণে দেশটির মুসলিম নারীরা এখন থেকে যেকোনো অমুসলিমকে বিয়ে করতে পারবে। তিউনিশিয়ার প্রেসিডেন্ট বেজি সাইদ এসেবসির পক্ষ থেকে তার প্রেস সচিব আইন পরিবর্তনের ঘোষণা দেন এবং নারীদের অভিনন্দন জানান। দেশটির বিদ্যমান বিবাহ আইন অনুযায়ী, পুরুষরা যেকোনো নারীকে বিয়ে করতে পারতো, তবে নারীরা অমুসলিম কাউকে জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নিতে পারতো না।
তিউনিশিয়ার মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় ৯৯ শতাংশ মুসলিম। দেশটিতে প্রচলিত ১৯৭৩ সালের বিয়ে আইন অনুসারে, মুসলিম নারীকে বিয়ে করতে হলে অমুসলিম পুরুষকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে হতো এবং সরকারের কাছে ধর্মান্তকরণের সনদ প্রদান করতে হতো। বর্তমান আইনটির ফলে সেই বাধ্যবাধকতা আর থাকলো না।
গত মাসে জাতীয় নারী দিবস উপলক্ষে প্রদান করা বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট বেজি সাইদ বলেন, বর্তমান বিবাহ আইন নারীদের জন্য বাধা। এমনকি আরব বসন্তের পর অনুমোদন করা ২০১৪ সালের সংবিধানের পরিপন্থীও। প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের পর এই আইন বিলুপ্তির ঘোষণা আসে। এরআগে, আইনটি পুনর্বিবেচনার জন্য একটি কমিশন গঠন করে দেশটির সরকার। বহুদিন ধরে মানবাধিকার সংগঠনগুলো তিউনিশিয়ার বিবাহ আইনের সমালোচনা করে আসছিলো। এসব সংগঠনের মতে, তিউনিশিয়ার নারীরা এখনও বড় ধরনের বৈষম্যের শিকার। দেশটিতে ঐতিহ্যগতভাবে মেয়ে সন্তান থেকে ছেলে সন্তানকে বেশি প্রধান্য দেয়া হয়। তিউনিশিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অফ ডেমোক্রাটিকের নামক একটি সংস্থার জরিপে বলেছে, ‘সেখানে ৭০ ভাগ নারীকেই নির্যাতনের শিকার হতে হয়।’
গত জুলাইয়ে তিউনিশিয়ার পার্লামেন্ট বিবাহ সম্পর্কিত আরেকটি নতুন আইন তৈরি করে। সেখানে বলা হয়, যদি কোনো ধর্ষক ভুক্তভোগী নারীকে বিয়ে করে তাহলে সে সবধরনের সাজা থেকে মওকুফ পাবে। নারী অধিকার নিয়ে কাজ করেন এমন অনেকে আইনটিকে ‘অসম্মানজনক ও অবমাননাকর’ বলে উল্লেখ করেছেন।
যমুনা অনলাইন: টিবিজেড
Leave a reply