ইউক্রেনে চলছে যুদ্ধ। উদ্বেগ-উৎকন্ঠা আর মৃত্যুভয়ে দিন কাটছে প্রবাসী বাংলাদেশিসহ সাধারণ মানুষের। ইউক্রেন প্রবাসী অধ্যাপক ড. মৃদুলা ঘোষ জানালেন, একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পর এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখেননি তিনি।
ইউক্রেন ভূখণ্ডে রুশ অভিযানের সপ্তাহ পার হলেও কমেনি সংকটের মাত্রা। বরং প্রতি মুহুর্তে তা বাড়ছে। হামলার পরিসরও সীমান্ত থেকে খোদ রাজধানী কিয়েভে এসে ঠেকেছে।
সামরিক ঘাঁটি আর স্পর্শকাতর স্থাপনাগুলো রুশ হামলার টার্গেট। তবে, ধ্বংসযজ্ঞ এড়াতে পারছে না আবাসিক এলাকাগুলোও। কঠিন প্রতিরোধ থাকলেও ঠেকানো যাচ্ছে না শক্তিধর রুশ সেনাবহরকে।
এরইমধ্যে বাংলাদেশি জাহাজে গোলা বিস্ফোরণে এক নাবিকের মৃত্যু বাড়িয়েছে আতঙ্ক। প্রবাসী বাংলাদেশিরা বলছেন, এমন সংকট দেখেননি আগে। নির্দোষ-বেসামরিক মানুষের ওপর হামলা বন্ধে পক্ষপাত ভুলে সবাইকে হতে হবে ঐক্যবদ্ধ।
ইউক্রেন প্রবাসী ব্যবসায়ী মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন, তিনি কিয়েভ ছাড়ার আগে ইউক্রেনের রাজধানীতে ধ্বংসযজ্ঞ দেখেছেন খুব কাছ থেকে। তার পরিচিতদের মধ্যে যারা এখন কিয়েভে রয়েছেন, তারা আতঙ্কে পার করছেন প্রতিমুহুর্ত।
এরইমধ্যে দেশটিতে বসবাসরত বাংলাদেশ ও ভারতসহ এই অঞ্চলের অনেকেই পোল্যান্ড, রোমানিয়াসহ সীমান্তবর্তী দেশগুলোয় প্রাণভয়ে পালিয়েছেন। আবার অনেকেই যাননি বা যেতে পারেননি। তাদের অভিজ্ঞতা ভয়াবহ। বলছিলেন, বিনা দোষে কেন মরতে হবে সাধারণ মানুষকে?
ড. মৃদুলা ঘোষ আরও জানান, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ছোট ছিলেন। দেখেছেন ৭১ এর হত্যাযজ্ঞ। এবার ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন দেখে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, সামরিক শক্তিতে অপেক্ষাকৃত এগিয়ে থাকা দেশগুলো কি এভাবে কম শক্তিধর দেশের ওপর হামলা চালাতে পারে?
এখনও বেঁচে থাকলেও প্রতি মুহুর্তেই মৃত্যুভয় তাড়া করছে ইউক্রেনে থাকা এসব মানুষকে। তাদের আহ্বান, বন্ধ হোক সাধারণ মানুষের ওপর আক্রমণ আর যুদ্ধের নামে গণহত্যা।
উল্লেখ্য, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার জানিয়েছিলেন, সাড়ে চারশো বাংলাদেশি ইউক্রেন থেকে পোল্যান্ড, অষ্ট্রিয়া ও রোমানিয়াতে আশ্রয় নিয়েছেন। আরও সাতশো বাংলাদেশি ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে আটকে পড়ে আছেন বলে তখন উল্লেখ করেছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
/এমএন
Leave a reply