হাওরের জিরাতি কৃষকের খবর রাখে না কেউ

|

কিশোরগঞ্জে বিস্তীর্ণ হাওরের বুকে ছাপরা ঘরে মাস ছয়েকের জন্য বসবাস তাদের। ঝড়-বজ্রপাতের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মাথায় নিয়েই হাওরের একমাত্র ফসল বোরো ধান আবাদ করেন তারা। স্থানীয়ভাবে তাদের বলা হয় জিরাতি কৃষক। বংশ পরম্পরায় ফসল উৎপাদনে অসামান্য অবদান রাখলেও এসব মানুষের কষ্টের জীবনযাপনের খবর রাখে না কেউ।

কিশোরগঞ্জের ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রামের হাওরাঞ্চলে ফসলের মাঠে এই সময়টায় চোখে পড়ে ছোট ছোট অস্থায়ী ঘর। যেখানে মাস ছয়েকের জন্য সংসার পাতেন চাষীরা। স্থানীয়ভাবে তাদের বলা হয় জিরাতি কৃষক। যাদের বাড়ি অনেক দূরে মূলত তারাই ফসল আবাদের মৌসুমে বসবাসের জন্য হাওরের বুকে এসব ঘর নির্মাণ করেন। কেউ নিজের জমিতে কেউ আবার অন্যের জমি বর্গা নিয়ে আবাদ করছেন বোরো ধান।

সোনালি ফলনের হাতছানিতে ঝড়-বজ্রপাতের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মাথায় নিয়েই দিন কাটে এসব মানুষের। বংশ পরম্পরায় হাওরের বুকে ফসল উৎপাদন করে অর্থনীতিতে অসামান্য অবদান রাখলেও তাদের কষ্টের জীবনের খবর রাখে না কেউ। জিরাতি কৃষকরা জানালেন, মাঠের মধ্যে বসবাস করার কিছু সমস্যা রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর পয়নিষ্কাশন ও সুপেয় পানি। আর ঝড়ের মৌসুমে খোলা মাঠে রয়েছে দুর্যোগের ঝুঁকি। প্রায়ই বজ্রপাতে মারা যান অনেকে।

কৃষকরা জানালেন, দূরে নদী, সেখানে গিয়ে সারতে হয় গোসল। গরুবাছুরের গা ধোয়াতেও যেতে হয় সেখানেই। একমাত্র উৎস হওয়ায় পান করার জন্যও সেখান থেকেই সংগ্রহ করতে হয় ঘোলা পানি। যা পান করে ‘পেট নামে’ অনেকের।

অবশ্য চাষীদের ঝড় ও বজ্রপাত থেকে রক্ষায় নানা উদ্যোগের কথা বলছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের এমপি রেজওয়ান আহম্মদ তৌফিক। জানালেন, হাওড় এলাকায় এসব মানুষের সুরক্ষার জন্য আশ্রয়কেন্দ্র বানানোর পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। রয়েছে বজ্রনিরোধক যন্ত্র বসানোর পরিকল্পনাও।

প্রশাসনের হিসাবে গেলো ৩ বছরে কিশোরগঞ্জের হাওরে বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে ৩৯ জন কৃষকের।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply