বিস্ফোরকের অভাবে দেশের একমাত্র পাথর খনির উত্তোলন বন্ধ হয়ে গেছে। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইন কোম্পানি (এমজিএমসিএল) প্রয়োজনীয় বিস্ফোরক ‘অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট’ সরবরাহ করতে না পারায় শনিবার (১২ মার্চ) থেকে নিয়মিত উত্তোলন করতে পারছে না খনিটি। আর তাতে দৈনিক এক কোটি ৩৮ লাখ টাকা ক্ষতি গুণতে হচ্ছে সরকারকে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতা। পেট্রোবাংলার দাবি, এই সংকট সাময়িক। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে বিস্ফোরক আসলে পুনরায় উৎপাদন শুরু সম্ভব।
দিনাজপুরে অবস্থিত দেশের একমাত্র পাথর খনিটি বাণিজ্যিক উৎপাদনে আসে ২০০৮ সালে। নানা জটিলতার পর এটির উৎপাদনে বেলারুশের জার্মানিয়া স্ট্রেট কনসোর্টিয়ামের সাথে ২০১৩ সালে ছয় বছরের চুক্তি করে সরকার। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৭ কোটির বেশি মুনাফা করে রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিটি।
গত অক্টোবর আবারও একই কোম্পানির সঙ্গে ছয় বছরের চুক্তি করে খনিজসম্পদ বিভাগ। শ্রমিকসহ প্রায় সাড়ে সাতশ কর্মী তিন শিফটে ২৪ ঘন্টা কাজ করতো এই খনিতে। খনির গভীরে পাথর ভাঙার কাজে ব্যবহৃত বিস্ফোরক সররবাহ করে এমজিএমসিএল। সেটি আর দিতে না পারায় শনিবার থেকে উত্তোলন অব্যাহত রাখতে পারলো না ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
এই খনি থেকে দৈনিক সাড়ে ৫ হাজার মেট্রিক টন কঠিন শিলা তোলা হতো। উন্নতমানের এই পাথর ব্যবহৃত হচ্ছিল রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্পে। এ রকম গুরুত্বপূর্ণ আর স্পর্শকাতর স্থাপনার উত্তোলন বিষ্ফোরকের অভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনাকে দায়িত্বশীলদের অদূরদর্শিতা হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
পেট্রোবাংলা বলছে, অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট আমদানিতে দরপত্র আহ্বান করেও সাড়া মেলেনি বহুদিন। সবশেষ একটি চালানে ২৫০ মেট্রিক টন আসার কথা। এর মধ্যে ৮৮ মেট্রিক টন নিয়ে জাহাজ রওনা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান। দিনে দেড় টনের মতো এই বিস্ফোরক লাগে খনিতে, ফলে ওই চালান আসলে তা দিয়ে মাস দেড়েক চালু রাখা যাবে খনি।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে বিস্ফোরক আমদানি আরও কঠিন হতে পারে বলে আশঙ্কা। এর আগেও একাধিকবার নানা জটিলতায় বন্ধ ছিল মধ্যপাড়া কঠিন শিলা প্রকল্পের উত্তোলন।
/এমএন
Leave a reply