রুশ সেনাবাহিনীর গোলার ধ্বংস হয়ে গেছে ইউক্রেনের খারকিভে অবস্থিত আর্নেস্ট হেমিংওয়েকে উৎসর্গকৃত পানশালা ‘ওল্ড হেম’। গত সোমবার (১৪ মার্চ) রাতে রুশ গোলায় সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে যায় দেশব্যাপী বিখ্যাত ও তরুণ লেখক, শিল্পীদের কাছে দারুণ জনপ্রিয় এই পানশালাটি। খারকিভের প্রসিকিউটর অফিস জানিয়েছে, ভবনটিতে রুশ হামলায় প্রাণ হারিয়েছে দুই ইউক্রেনীয়। খবর বিবিসির।
খারকিভের আইকনিক পানশালা ওল্ড হেমে টাঙানো ছিল একটি লেখা, এখানে কেউ একা নয়। প্রবেশমুখেই ছিল যুক্তরাষ্ট্রের কিংবদন্তি সাহিত্যিক আর্নেস্ট হেমিংওয়ের একটি ভাস্কর্য। শহরের প্রগতিশীল তরুণ শিল্পী, লেখকদের আড্ডাস্থল এই পানশালায় ইউক্রেনের অন্যতম বিখ্যাত কবি সের্হেই ঝাদান সময় কাটাতেন। ওল্ড হেমের মালিক কস্তিয়ান্টাইন কুটস বলেন, এখানকার পরিবেশ ছিল বন্ধুত্বপরায়ণ। আরাম ও স্বস্তিতে এখানে সময় কাটানো যেত। জায়গাটি এমন তরুণ, যুবকদের কাছে জনপ্রিয় ছিল যারা দেশ ও পৃথিবী নিয়ে আশাবাদী ছিল। তারা যুদ্ধ পছন্দ করতো না। এমনকি, যুদ্ধের শুরুতেও আমরা কেউ বিশ্বাস করতে পারিনি যে কী ঘটতে যাচ্ছে। পানশালাটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। ভেবেছিলাম, দ্রুতই খুলে দিতে পারবো জায়গাটি। তবে আবাসিক এলাকায় রুশ হামলার সাথে সাথেই উবে গেছে আমাদের কল্পনা।
২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরু হওয়ার পরই পানশালাটি বন্ধ করে দেয়া হয়। বোমা থেকে বাঁচার আশ্রয়স্থল হিসেবেই ব্যবহৃত হচ্ছিল জায়গাটি। ইয়ুরি নামের এক ইউক্রেনীয় লেখক বলেন, এখানে সবার সাথে দেখা হতো, সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য চমৎকার জায়গা ছিল এটা, পানশালার চেয়েও বেশি কিছু। সের্গেই দোভ্লাতভ, চার্লস বুকোওস্কি, মার্ক টোয়াইনদের ছবি সম্বলিত এই পানশালাটিই কেন ধ্বংস করতে হবে, সেটি মানতে পারছি না।
পশ্চিম ইউক্রেনে বাস করা পানশালাটির মালিক কুটস জার্মানি চলে যাওয়ার কথা ভাবছেন। তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, হেমের গল্প এখানেই শেষ হবে না। যুদ্ধে আমরাই জিতবো। হেমও আবার জেগে উঠবে।
আরও পড়ুন: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: এক নজরে সবশেষ পরিস্থিতি
এম ই/
Leave a reply