রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ প্রবেশ করেছে ২১তম দিনে। একদিকে চলছে মুহুর্মুহু হামলা-পাল্টা হামলা। অন্যদিকে, সংঘাত বন্ধে কূটনীতির টেবিলে চলছে দৌঁড়ঝাপ। যুদ্ধের ফলাফল বা সময়সীমা নিয়ে সংশয় থাকলেও ন্যাটোর সাথে ইউক্রেনের সংযোগ হ্রাস করার উদ্দেশ্যেই যে দেশটিতে হামলা চালিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, তা নিয়ে নেই কোনো রাখঢাক। পুতিন কেন নিরপেক্ষ ইউক্রেন চান, তা নিয়ে প্রতিবেদন এসেছে বিবিসিতে।
সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙনের পর, ১৯৯১ সালে স্বাধীন হয় ইউক্রেন। স্বাধীনতা লাভের পর থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটোভুক্ত পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে সখ্যতা বাড়ায় দেশটি।
কিন্তু রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের এই যাত্রার প্রচেষ্টাকে পাল্টে দিতে চান। কারণ, সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙনকে এখনো ‘ঐতিহাসিক রাশিয়া’র বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া হিসেবেই দেখেন পুতিন। তিনি দাবি করেন, রুশ এবং ইউক্রেনীয়রা একই অঞ্চলের অভিন্ন মানুষ। ইউক্রেনের ঐতিহ্যকে অস্বীকার করার অংশ হিসেবে পুতিন বলেন, স্বতন্ত্র রাষ্ট্র হিসেবে কোনো ঐতিহ্য কখনোই ছিল না ইউক্রেনের।
২০১৩ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে একটি চুক্রি স্বাক্ষর না করার ব্যাপারে ইউক্রেনের রুশপন্থী নেতা ভিক্টর ইয়ানুকোভিচকে চাপ প্রয়োগ করেন পুতিন। এই ঘটনায় প্রতিবাদমুখর ইয়ানুকোভিচকেও ক্ষমতাচ্যুত করা হয় ২০১৪ সালে। এর প্রতিশোধ হিসেবে সে বছরই ইউক্রেনের দক্ষিণের অঞ্চল ক্রাইমিয়ার দখল নেয় রুশ বাহিনী। ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলেও একটি বিদ্রোহে মদদ দিয়েছে রাশিয়া। সেখানে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সমর্থন দেয় মস্কো; যার ফলশ্রুতিতে যুদ্ধ চলে ৮ বছর এবং প্রাণ হারায় প্রায় ১৪ হাজার মানুষ।
এরপর ২০১৫ সালে মিনস্ক শান্তি চুক্তির আওতায় যুদ্ধ বিরতি ঘোষিত হয়েছিল, তবে তা কার্যকর হয়নি কখনোই। ইউক্রেন আক্রমণের আগে শান্তি চুক্তিটি ছিঁড়ে ফেলেন ভ্লাদিমির পুতিন এবং রাশিয়া সমর্থিত দুটি অঞ্চলকে ইউক্রেন থেকে বিচ্ছিন্ন হিসেবে ঘোষণা করেন। ইউক্রেনে রুশ সেনাবাহিনী পাঠানোর সময় ন্যাটোর প্রতি অভিযোগ তুলে পুতিন বলেন, আমাদের ঐতিহাসিক ভবিষ্যতের জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে ন্যাটো। তাছাড়া, ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো ক্রাইমিয়াতে যুদ্ধ নিয়ে আসতে চেয়েছিল।
আরও পড়ুন: পুতিনকে যুদ্ধাপরাধী বলায় বাইডেনের ওপর ক্ষেপেছে মস্কো
এম ই/
Leave a reply