‘ছিঁড়ে গেছে শালীনতার মুখোশ, বেরিয়ে পড়েছে পশ্চিমাদের প্রকৃত রূপ’

|

ছবি: সংগৃহীত

পশ্চিমাদের তুলোধুনো করলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেছেন, ছিঁড়ে গেছে মুখোশ; বেরিয়ে পড়েছে মার্কিন লেজুড়বৃত্তি করা পশ্চিমা দেশগুলোর প্রকৃত রূপ। বুধবার (১৬ মার্চ) রুশ শিল্পপতি-ব্যবসায়ী মহলের সাথে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে পুতিন জানান, প্রবাসীরা বয়কটের শিকার হচ্ছে। তিলে তিলে রাশিয়াকে ধ্বংস করাই পশ্চিমাদের মূল লক্ষ্য। রুশ প্রেসিডেন্ট হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, প্রোপাগান্ডা ছড়াতে গণমাধ্যমকে ব্যবহার করলে ভোগ করতে হবে চরম পরিণতি।

ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকেই চাপের মুখে আছে রাশিয়া। আন্তর্জাতিক মহলের নিন্দা ও সমালোচনার পাশাপাশি নিষেধাজ্ঞায় কোণঠাসা পুতিন প্রশাসন। যুদ্ধ বিরোধী বিক্ষোভ হচ্ছে রাশিয়ার অভ্যন্তরেও। সংকট সমাধানে কূটনৈতিক তৎপরতা চালালেও প্রকাশ্যে রাশিয়ার অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন পুতিন। পশ্চিমাদের এতটা কঠোর সমালোচনা থেকে এতদিন বিরত থাকলেও ব্যবসায়িক মহলের সাথে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে পশ্চিমাদের রীতিমতো তুলোধুনো করলেন পুতিন। তিনি বলেন, তথাকথিত শালীনতার মুখোশ ছিড়ে গেছে পশ্চিমা বিশ্বের। বেরিয়ে এসেছে আসল রূপ। চাষা-গোয়ারের মতো আচরণ করছে রুশদের সাথে। ১৯৩০ সালে জার্মানিতে এমনটাই ছিল নাৎসী বাহিনী। ইউরোপে রুশরা পাচ্ছেন না চিকিৎসা; তাদের চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে। সন্তানরা পাচ্ছে না স্কুলে যাওয়ার সুযোগ। বয়কট করা হয়েছে রুশ শিল্প-সংস্কৃতি-সাহিত্য সবকিছুই।

সেই সাথে পুতিন তিরষ্কার করেন পশ্চিমা পররাষ্ট্র ও অর্থনৈতিক নীতিমালার। স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, রাশিয়ার সাথে এমন বৈরিতার পরিণতি হবে ভয়াবহ। ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, আমাদের সমাজ-চিন্তাধারায় ফাটল ধরানোই পশ্চিমাদের মূল উদ্দেশ্য। সামরিক ক্ষয়ক্ষতি আর নিষেধাজ্ঞা আরোপে আমাদের বাণিজ্য কতোটা কোণঠাসা, সেটাই তাদের মাথাব্যাথা। সেগুলোকে পুঁজি করে রাশিয়ার অভ্যন্তরে ছড়ানো হচ্ছে অসন্তোষ। আর, এসব প্রোপাগান্ডার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে গণমাধ্যম। কোনোভাবেই এগুলো সহ্য করবো না।

পুতিন স্বীকার করেন, নিষেধাজ্ঞার চাপে রাশিয়ার বাজার কিছুটা টালমাটাল। সেটি পুনরুদ্ধারে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। তিনি বলেন, অর্থনীতিতে কাঠামোগত পরিবর্তন আনা খুবই জরুরি। বিষয়টি সহজ নয় আর সরকার লুকোচ্ছে না। নিষেধাজ্ঞার কারণে সাময়িকভাবে বাড়ছে মূল্যস্ফীতি আর বেকারত্ব। সেগুলোর ঝুঁকি কমানোই মূল চ্যালেঞ্জ। সেক্ষেত্রে, গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বেসরকারি খাত। উৎপাদন বৃদ্ধি আর পণ্যের জন্য বিকল্প উৎস খুঁজে বাজার স্থিতিশীল করতে হবে।

২৪ ফেব্রুয়ারি, ইউক্রেন ভূখণ্ডে হামলা শুরু করে রাশিয়া। দেশটির ওপর গণহত্যা, বর্বর নির্যাতন, হত্যাযজ্ঞ চালানোর অভিযোগ আনে পশ্চিমারা। অবিলম্বে, ইউক্রেনে সামরিক অভিযান বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক বিচার আদালতও। প্রকৃত হতাহতের তথ্য এখনো নিশ্চিত নয়। তবে শরণার্থীর সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩১ লাখ; যাদের বড় অংশই শিশু ও নারী।

আরও পড়ুন: কেন নিরপেক্ষ ইউক্রেন চান পুতিন?

এম ই/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply