ইউক্রেন যুদ্ধের ২৭তম দিনে যা বোঝা যাচ্ছে

|

২৭তম দিনে গড়ালো ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন। বড় ধরনের হামলার শঙ্কায় কারফিউ চলছে রাজধানী কিয়েভে। স্থানীয় সময় বুধবার (২৩ মার্চ) সকাল ৭টা পর্যন্ত জারি থাকবে এই নির্দেশনা। এরই মধ্যে রুশ বাহিনী ইউক্রেনে হাইপারসনিক মিসাইল ছুড়তে শুরু করেছে। আর অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র আরও অত্যাধুনিক ও বিধ্বংসী অস্ত্র দিচ্ছে ইউক্রেনকে। ফলে এমন সময় এসে মনে হচ্ছে, দ্রুতই যুদ্ধ পরিস্থিতি কোনো নতুন দিকে মোড় নিতে পারে।

এরই মধ্যে শুরু হয়েছে উদ্ধার অভিযান। নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বাসিন্দাদের। সোমবার ৮ শতাধিক শিশুসহ নিরাপদে আশ্রয়ে পাঠানো হয়েছে দেড় হাজারের বেশি মানুষকে।

এদিকে বন্দরনগরী মারিওপোল দখলে নিতে জোরালো অভিযান চালাচ্ছে রুশ বাহিনী। চলছে দফায় দফায় গোলাবর্ষণ। শহরটির নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলার দাবি জেলেনস্কি সরকারের।

নতুন করে হামলা চালানো হচ্ছে কৃষ্ণ সাগরের উপকূলীয় অঞ্চল ওডেসায়। এছাড়া স্বাধীন ঘোষণা করা দোনেৎকে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে চলছে তুমুল লড়াই। সেখানকার বেশিরভাগ এলাকা রুশপন্থীদের নিয়ন্ত্রণে গেলেও তৎপরতা রয়েছে ইউক্রেন সেনাদের।

এরইমধ্যে ইউক্রেনে হাইপারসনিক মিসাইল ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে। গত শনি ও রোববার ইউক্রেনে পরপর দুই দফা বিধ্বংসী হাইপারসনিক মিসাইল হামলা চালিয়ে কিয়েভের একটি অস্ত্রাগার ও জ্বালানি ডিপো গুঁড়িয়ে দেয় রুশ সেনারা। জানা গেছে, পশ্চিমাদের ভীত সন্ত্রস্ত করতেই যুদ্ধের কৌশল হিসেবে হাইপারসনিকের মতো বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করছে রাশিয়া। ইউক্রেনে পরপর দুই দফা উচ্চগতি ও ধ্বংসাত্মক এ অস্ত্রের ব্যবহারের পর এমনটাই মনে করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। এ ধরনের মিসাইল হামলায় যুদ্ধক্ষেত্রে বড় কোনো পরিবর্তন আসবে না বলেও মন্তব্য তাদের। তবে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।

এদিকে শক্তিশালী রুশ বাহিনীর সাথে যুদ্ধে টিকে থাকতে ইউক্রেনে আরও বিপুল পরিমাণ অস্ত্র পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। যা আগের দেয়া অস্ত্রগুলোর চেয়েও বেশি বিধ্বংসী। সেই তালিকায় রয়েছে বিমান বিধ্বংসী স্টিংগার, অত্যাধুনিক জ্যাভেলিন ক্ষেপণাস্ত্রসহ শত কোটি ডলারের হাজার হাজার মারণাস্ত্র। তবে টানা হামলার মধ্যে এসব অস্ত্রের চালান সংগ্রহ এবং বণ্টন জেলেনস্কি প্রশাসনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র।

মূলত যুক্তরাষ্ট্রের পাঠানো ট্যাংক বিধ্বংসী জ্যাভেলিন মিসাইল, পুতিন বাহিনীর কাছে এখন আতঙ্কের কারণ। ইউক্রেনের দাবি, এখন পর্যন্ত রাশিয়ার ৪ শতাধিক ট্যাংক ধ্বংস করা হয়েছে। গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে দুই হাজারের বেশি সাঁজোয়া যান, ভূপাতিত করা হচ্ছে রুশ ড্রোন ও হেলিকপ্টার।

ইউক্রেন সেনারা বলছেন, প্রতিটি চেকপয়েন্টে এখনও তাদের নিয়ন্ত্রণে। রুশদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য সব ধরনের অস্ত্র আছে তাদের কাছে। হামলার পর অনেক রুশ সেনা অস্ত্র রেখেও পালাচ্ছে বলেও জানায় সেনারা।

জেলেনস্কি বাহিনীকে শক্তিশালী করতে আরও শত কোটি ডলারের অস্ত্র পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, বিশাল এই চালানে পাঠানো হবে, বিমান বিধ্বংসী স্টিংগার, ট্যাংক ও সাঁজোয়া ধ্বংসকারী জ্যাভেলিন ক্ষেপণাস্ত্র, এমনকি গণবিধ্বংসী হাজার হাজার অস্ত্র।

শুধু অস্ত্র সহায়তাই নয় রুশ আগ্রাসন ঠেকাতে তুরস্ককে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-ফোর হান্ড্রেড পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply